প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, পঠন পাঠন অনলাইন এর ওয়েবসাইটে তোমাদের স্বাগত জানাই | আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা ভ্রমণ শিক্ষার অঙ্গ |
বাংলা প্রবন্ধ রচনা
ভূমিকা :
“হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে সিংহল সমুদ্র থেকে মালয় সাগরে অনেক ঘুরেছি আমি ।”
মানব সভ্যতার ইতিহাসের পাতা ওল্টালেই আমরা দেখতে পাবো মানুষ একসময় যাযাবর জীবন ত্যাগ করে ঘর বাঁধতে শুরু করলো। মানুষ স্থিত হল একটি নির্দিষ্ট স্থানে। সেই স্থানই হল তার বাসস্থান,তার দেশ । কিন্তু মানুষের মন এখনও সুদূর পিয়াসী । চিরকাল মানুষ বন্ধন অসহিষ্ণু।চেনা জগতের গণ্ডি ছাড়িয়ে অচেনা অজানা জগৎকে জানার আকাঙ্ক্ষা তার চিরকালের । তাই বার বার সব বাঁধন উপেক্ষা করে মানুষ পাহাড় পর্বত,সমুদ্র,অরণ্য,অজানা জনপদের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ।
ভ্রমণের উদ্দেশ্য :
প্রতিদিনের ব্যাস্ত জীবনের মধ্যে বৈচিত্র্য সৃষ্টি করাই ভ্রমণের প্রধান উদ্দেশ্য । নতুন জায়গা দেখার,অজানাকে জানার,প্রকৃতির সৌন্দর্য কে উপভোগ করার উদ্দেশ্যে আমরা ভ্রমণ করি দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে । কবির ভাষায় -
“বিপুলা এ পৃথিবীতে কতটুকু জানি ।
দেশে দেশে কত না নগর রাজধানী ।
মানুষের কত কীর্তি,কত নদী গিরির নিন্ধু মরু,
কত না জানার জীব,কত না অপরিচিত তরু
রয়ে গেল অগোচরে ।”
যা কিছু অগোচরে রয়ে গেল, তা গোচরীভূত করতে দেশ ভ্রমণ একান্ত প্রয়োজন। আর এই হল ভ্রমণের উদ্দেশ্য।
দেশভ্রমণ শিক্ষার অঙ্গ :
ভ্রমণ শুধুমাত্র প্রমোদের উপকরণ নয়, ভ্রমন হল শিক্ষারও এক বিশিষ্ট অঙ্গ। দেশ ভ্রমণের সঙ্গে শিক্ষার এক গভীর ও অচ্ছেদ্য সম্পর্ক।বই পড়ে যে জ্ঞান অর্জন করা যায়, দেশভ্রমণ দেয় তার অনেক বেশি জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা । রমণ আমাদের পুঁথিগত বিদ্যা থেকে মুক্তি দেয়। ভ্রমণ আমাদের বাস্তব অঙ্গনের সম্মুখীন করে।
কল্পনার তরণকে মুক্ত করে। শিক্ষাকে সজীব ও আনন্দের সামগ্রী করে তোলা একমাত্র ভ্রমণের পক্ষেই সম্ভব । বই পড়ে বনভূমিকে চেনা যায় না, জানা যায় না নানান ধরনের গাছ পালা,পশু পাখি সম্মন্ধে,জানা যায় না অন্তহীন সমুদ্রের বিশালতা তাই ভ্রমণ শিক্ষার সাথে একান্ত ভাবে যুক্ত হওয়া প্রয়োজন । সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সমস্ত শ্রেণীর বিদ্যার্থীদের জন্য দেশভ্রমনের ব্যাবস্থা করা বিশেষ প্রয়োজন ।
দেশভ্রমণের উপযোগিতা :
ভিন্ন ভিন্ন মানুষের কাছে ভ্রমণের নানা ধরনের পার্থক্য ও বৈচিত্র্য । ভ্রমণের মাধ্যমে একে অপরের মধ্যে ভাব বিনিময় ও গড়ে ওঠে পারস্পরিক মেলামেশার সুঅভ্যাস। দেশভ্রমণ মানবজীবনে নিয়ে আসে বৈচিত্র্যের আস্বাদন।নতুন নতুন মানুষের সাথে আলাপ পরিচয়ের মধ্য দিয়ে ভরে ওঠে হৃদয় পাত্র ।
বেড়ে ওঠে হৃদয়ের প্রসারতা । ভ্রমণ সংকীর্ণতার প্রাচীর ভেঙে প্রীতির বন্ধনকে দৃঢ় করে । বেশির ভাগ ভ্রমণ করার সময় নিজের হাতে নিজেকে চালনা করতে হয়, এর মধ্য দিয়ে অনুশীলন হয় সাবলম্বন শক্তির। সাহস ও আত্মবিশ্বাস বাড়ে মনে। এছাড়াও স্বদেশ ঘোরার মাধ্যমে জেগে দেশাত্মবোধ।
অর্থনৈতিক দিক :
ভ্রমণ অর্থাগমের পথকে উন্মুক্ত করে। বর্তমান সময়ে পর্যটন বিশিষ্ট অর্থকরী শিল্প।শুধু দেশের মধ্যেই নয়,দেশের সীমানা অতিক্রম করে বিদেশের ভূমিতেও এখন পর্যটকদের অবাধ গতি।বিদেশি পর্যটকরাও এদেশে ঘুরতে আসে যার ফলে অর্জিত হয় বৈদেশিক মুদ্রা । পর্যটকদের ভিড় সামলাতে দর্শনীয় স্থান গুলিতে হোটেল শিল্পের শ্রীবৃদ্ধি ঘটছে।খাওয়া দাওয়া থেকে সে আঞ্চলিক বিখ্যাত শিল্পগত জিনিসের কেনাকাটার মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা উন্নত হচ্ছে।
উপসংহার :
আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। প্রাচীন সভ্য দেশ হল আমাদের দেশ। দর্শনীয় স্থানের অভাব নেই এখানে।এখানে আছে ইতিহাসের কত মূল্যবান উপাদান,আছে পবিত্র তীর্থস্থান,আছে সুবিশাল অরণ্য, এছাড়াও পাহাড়,পর্বত,সমুদ্র, মরুভূমি আরও কত কি । জনসাধানরের আগ্রহে ও সরকারি, বেসরকারি উদ্যোগে দেশভ্রমণ জনকল্যাণের কাজে যুক্ত হয়ে সার্থক ও সফল হতে পারে ।
অন্যান্য প্রবন্ধ রচনার আপডেট পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন |
আমাদের এই প্রয়াস আপনাদের ভালো লেগে থাকলে আমাদের সাহায্য করতে পারেন | আমাদের সাহায্য করতে নীচের DONATE বাটনে ক্লিক করুন |
তোমাদের কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা তোমরা এই পোস্টের নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে জানাতে পারো ।
আমাদের লেটেস্ট পোস্টের আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করতে পারো । আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করার জন্য পাশের লিংকটিতে ক্লিক কর: Pothon Pathon Facebook Page
আমাদের Telegram Channel এ জয়েন হতে পাশের লিংক এ ক্লিক করন: Pothon Pathon Telegram
Post a Comment
Please put your valuable comments.