প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, পঠন পাঠন অনলাইন এর ওয়েবসাইটে তোমাদের স্বাগত জানাই | আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষার (Madhyamik Exam 2022 History Suggestions) জন্য History এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন অর্থাৎ Madhyamik 2022 History Last Minute Suggestions.
মাধ্যমিক লাস্ট মিনিট সাজেশনস 2022
ইতিহাস
দ্বিতীয় অধ্যায়
সংস্কার : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা
◪ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন : প্রতিটি প্রশ্নের মান 1
1. কলকাতা কমলালয় ছিল বড়তলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। এর সম্পাদক ছিলেন -
A. ব্রাত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
B. মার্শম্যান
C. ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
D. গিরিশচন্দ্র ঘোষ
উত্তর: C. ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
2. সাপ্তাহিক পত্রিকা হিন্দু প্যাট্রিয়ট এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন?
A. মার্শম্যান
B. গিরিশচন্দ্র ঘোষ
C. ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
D. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
উত্তর: B. গিরিশচন্দ্র ঘোষ
3. হুতুম পেঁচা কার ছদ্মনাম ছিল?
A. কালীপ্রসন্ন সিংহ
B. কাঙাল হরিনাথ
C. দীনবন্ধু মিত্র
D. হরিশচন্দ্র মুখার্জী
উত্তর: A. কালীপ্রসন্ন সিংহ
4. গ্রামবার্তা প্রকাশিকা সম্পাদক ছিলেন-
A. কালীপ্রসন্ন সিংহ
B. দীনবন্ধু মিত্র
C. কাঙাল হরিনাথ
D. হরিশচন্দ্র মুখার্জী
উত্তর: C. কাঙাল হরিনাথ
5. হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার প্রথম মালিক ছিলেন-
A. হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
B. গিরিশচন্দ্র ঘোষ
C. মধুসূদন রায়
D. রাজা রামমোহন রায়
উত্তর: C. মধুসূদন রায়
6. কলকাতা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন -
A. লর্ড ক্যানিং
B. ওয়ারেন হেস্টিংস
C. লর্ড ডালহৌসি
D. লর্ড কর্নওয়ালিস
উত্তর: B. ওয়ারেন হেস্টিংস
7. ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় -
A. 1800 খ্রিস্টাব্দে
B. 1801 খ্রিস্টাব্দে
C. 1802 খ্রিস্টাব্দে
D. 1803 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: A. 1800 খ্রিস্টাব্দে
8. জেনারেল কমিটি অফ পাবলিক ইন্সট্রাকশন গঠিত হয়েছিল -
A. 1820 খ্রিস্টাব্দে
B. 1821 খ্রিস্টাব্দে
C. 1822 খ্রিস্টাব্দে
D. 1823 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: D. 1823 খ্রিস্টাব্দে
9. পাশ্চাত্য শিক্ষা সরকারি শিক্ষা নীতি ঘোষিত হয় -
A. 1800 খ্রিস্টাব্দে
B. 1820 খ্রিস্টাব্দে
C. 1823 খ্রিস্টাব্দে
D. 1822 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: C. 1823 খ্রিস্টাব্দে
10. শ্রীরামপুর ব্যাপ্টিস্ট মিশন প্রতিষ্ঠা হয়-
A. 1800 খ্রিস্টাব্দে
B. 1801 খ্রিস্টাব্দে
C. 1802 খ্রিস্টাব্দে
D. 1803 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: A. 1800 খ্রিস্টাব্দে
11. কলকাতায় হেয়ার স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন-
A. ড্রিংক ওয়াটার বেথুন
B. ডেভিড হেয়ার
C. আলেকজান্ডার ডাফ
D. উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক
উত্তর: B. ডেভিড হেয়ার
12. ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম মহিলা কলেজ হল-
A. হিন্দু কলেজ
B. বিদ্যাসাগর কলেজ
C. স্কটিশ চার্চ কলেজ
D. বেথুন কলেজ
উত্তর: D. বেথুন কলেজ
13. ভিক্টোরিয়া কলেজ আর প্রচেষ্টায় স্থাপিত হয় তিনি হলেন-
A. বিদ্যাসাগর
B. ড্রিংক ওয়াটার বেথুন
C. ডেভিড হেয়ার
D. কেশব চন্দ্র সেন
উত্তর: D. কেশব চন্দ্র সেন
14. কলকাতা মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়-
A. উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক এর আমলে
B. লর্ড ক্যানিং এর আমলে
C. লর্ড ডালহৌসির আমলে
D. লর্ড কর্নওয়ালিসের আমলে
উত্তর: A. উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক এর আমলে
15. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয় -
A. 1857 খ্রিস্টাব্দে
B. 1860 খ্রিস্টাব্দে
C. 1850 খ্রিস্টাব্দে
D. 1867 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: A. 1857 খ্রিস্টাব্দে
16. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম চ্যান্সেলর ছিলেন -
A. লর্ড ক্যানিং
B. গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
C. জেমস উইলিয়াম কলভিল্
D. আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
উত্তর: A. লর্ড ক্যানিং
17. প্রথম মহিলা চিকিৎসকের নাম হল -
A. চন্দ্রমুখি বসু
B. কাদম্বিনী গাঙ্গুলী
C. সরলা দেবী চৌধুরানী
D. সরোজিনী নাইডু
উত্তর: B. কাদম্বিনী গাঙ্গুলী
18. হান্টার কমিশন গঠন করেন -
A. লর্ড রিপন
B. লর্ড বেন্টিঙ্ক
C. লর্ড ক্যানিং
D. লর্ড কার্জন
উত্তর: D. লর্ড কার্জন
19. কেশব চন্দ্র সেন নববিধান ঘোষণা করেন-
A. 1878 খ্রিস্টাব্দে
B. 1880 খ্রিস্টাব্দে
C. 1885 খ্রিস্টাব্দে
D. 1875 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: B. 1800 খ্রিস্টাব্দে
20. রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা হয়-
A. 1885 খ্রিস্টাব্দে
B. 1897 খ্রিস্টাব্দে
C. 1892 খ্রিস্টাব্দে
D. 1895 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: B. 1897 খ্রিস্টাব্দে
একটি বা দুটি শব্দে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান ১
1) বামাবোধিনী সভা কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: উমেশচন্দ্র দত্ত 1863 খ্রিস্টাব্দে।
2) হিন্দু পেট্রিয়ট পত্রিকা কবে প্রকাশিত হয় ?
উত্তর: 1853 খ্রিস্টাব্দে 6 জানুয়ারি ।
3) হুতুম প্যাঁচার নকশা গ্রন্থটি কে কবে রচনা করেন?
উত্তর: কালীপ্রসন্ন সিংহ 1862 খ্রিস্টাব্দে।
4) নীলদর্পণ নাটক কে কবে রচনা করেন?
উত্তর: দীনবন্ধু মিত্র 1860 খ্রিস্টাব্দে।
5) গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকা কবে প্রকাশিত হয়?
উত্তর: 1863 খ্রিস্টাব্দে।
6) জনশিক্ষা কমিটি বা জেনারেল কমিটি অফ পাবলিক ইন্সট্রাকশন কে কবে গঠন করেন?
উত্তর: লর্ড আমহার্স্ট 1823 খ্রিস্টাব্দে।
7) শ্রীরামপুর মিশন কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর: 1793 খ্রিস্টাব্দে। ব্যাপ্টিস্ট মিশনারি উইলিয়াম কেরি, তার স্ত্রী অ্যানা কেরি এবং পুত্রর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়।
8) জেনারেল অ্যাসেম্বলি ইনস্টিটিউশন কে প্রতিষ্ঠা করেন কবে?
উত্তর: স্কটিশ মিশনারি আলেকজান্ডার ডাফ আঠার 1830 খ্রিস্টাব্দে।
9) সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কবে কারা প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: 1835 খ্রিস্টাব্দে বেলজিয়ামের জেসুটস মিশনারীরা।
10) বেথুন স্কুল কে কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর: 1849 খ্রিস্টাব্দে 7 মে। প্রতিষ্ঠা করেন জন এলিয়ট ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুন।
11) প্রথম বাঙালি মহিলা ডাক্তার কে?
উত্তর: কাদম্বিনী গাঙ্গুলী।
12) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভাইস চ্যান্সেলর কে ছিলেন?
উত্তর: স্যার জেমস উইলিয়াম কলভিল।
13) অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন কে কবে গড়ে তোলেন?
উত্তর: হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও 1827 খ্রিস্টাব্দে।
15) বিধবা বিবাহ আইন কে কবে পাস করেন?
উত্তর: লর্ড ক্যানিং 1856 খ্রিস্টাব্দে।
16) হুগলির ইমামবাড়া কে তৈরি করেন?
উত্তর: হাজী মহাম্মদ মহসিন।
17) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর কাকে ব্রহ্মানন্দ উপাধি দেন?
উত্তর: কেশবচন্দ্র সেন কে ।
18) ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: কেশবচন্দ্র সেন ।
19) তিন আইন কবে প্রবর্তিত হয়?
উত্তর: 1872 খ্রিস্টাব্দে ।
20) ভারতীয় জাতীয়তাবাদের জনক বলা হয় কাকে?
উত্তর: স্বামী বিবেকানন্দকে।
21) বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী যোগসাধনা বিষয়ক গ্রন্থের নাম কি?
উত্তর: প্রশ্নোত্তর ।
22) History of Bengal গ্রন্থটি কার লেখা?
উত্তর: স্যার যদুনাথ সরকারের ।
23) বাংলার নবজাগরণের প্রাণকেন্দ্র কোথায় ছিল?
উত্তর: কলকাতায়।
24) তত্ত্ববোধিনী সভা কে প্রতিষ্ঠা করেন এবং কবে?
উত্তর: 1838 খ্রিষ্টাব্দের মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
25) তুহাফৎ উল মুয়াহিদ্দিন গ্রন্থের রচয়িতা কে?
উত্তর: রাজা রামমোহন রায়।
26) মধ্যবিত্ত শ্রেণী কথাটি উল্লেখ প্রথম কোন কাগজে পাওয়া যায়?
উত্তর: বঙ্গদূত ।
27) নীলদর্পণ নাটকটি ইংরেজি অনুবাদ কে করেন?
উত্তর: জেমস লং ।
28) শ্রীরামপুর কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় কবে?
উত্তর: 1818 খ্রিস্টাব্দে।
29) পটলডাঙ্গা একাডেমির বর্তমান নাম কি?
উত্তর: হেয়ার স্কুল ।
30) ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার ম্যাগনাকার্টা বলা হয় কাকে?
উত্তর: উডের ডেসপ্যাচ কে ।
31) মেডিকেল কলেজের প্রথম মহিলা স্নাতক কে ছিলেন?
উত্তর: বিধুমুখী বসু।
32) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভারতীয় উপাচার্য এর নাম কি?
উত্তর: গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়।
33) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম স্নাতক কারা ছিলেন?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও যদুনাথ বোস।
34) নব্য বঙ্গ গোষ্ঠীর একটি পত্রিকার নাম লেখ।
উত্তর: জ্ঞানান্বেষণ।
35) ডিরোজিও লেখা একটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখ।
উত্তর: ফকির অফ জঙ্গিরা।
36) উনিশ শতকে বাংলা নবজাগরণ কে ' তথাকথিত নবজাগরণ ' কে বলেছেন?
উত্তর: অশোক মিত্র ।
37) ভারতের প্রথম আধুনিক মানুষ কাকে বলা হয় ?
উত্তর: রাজা রামমোহন রায় কে
38) শব্দকল্পদ্রুম নামক সংস্কৃত অভিধান এর রচয়িতা কে ছিলেন?
উত্তর: রাধাকান্ত দেব ।
39) জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: আলেকজান্ডার ডাফ।
40) কত খ্রিস্টাব্দে সনদ আইনে ভারতীয় শিক্ষা খাতে 1 লক্ষ টাকা ব্যয় করার কথা প্রথম বলা হয়?
উত্তর: 1813 খ্রিস্টাব্দে সনদ আইনে ।
সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্নাবলী : প্রতিটি প্রশ্নের মান 2
1) বামাবোধিনী পত্রিকার গুরুত্ব কী ছিল?
উত্তর: বামাবোধিনী পত্রিকার প্রধান গুরুত্ব ছিল- এই পত্রিকা ক) নারী জনমত গঠনের ব্যবস্থা করে দেয়। খ) নারীজাতির চিন্তাভাবনাকে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবিত করে। গ) নারীদের নিজস্ব লেখনীর মাধ্যমে তাদের মতামত প্রকাশের সুযোগ করে দেয়।
2) হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার সমকালীন বাংলার কিরূপ সামাজিক চিত্র পাওয়া যায়?
উত্তর: হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার সমকালীন বাংলা সামাজিক শোষণ, সাধারণ মানুষের ওপর সরকার ও পুলিশের অত্যাচার, নীল চাষীদের উপর শোষণ ও অত্যাচার, দরিদ্র শ্রেণীর ওপর অত্যাচার, দরিদ্রদের দুরাবস্থা প্রভৃতি চিত্র পাওয়া যায়।
3) গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার কি কি বিষয় আলোচনা প্রকাশিত হত?
উত্তর: গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকায় নীলকর, জমিদার ও মহাজনদের অত্যাচার, এর বিবরণ সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান, বিপ্লবীদের শপথ ও বীরত্বগাথা প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা প্রকাশিত হত ।
4) হুতুম প্যাঁচার নকশা গ্রন্থের কোন ভাগে কিসের জন্য রয়েছে ?
উত্তর: হুতুম প্যাঁচার নকশা গ্রন্থের প্রথম ভাগে কলকাতার সড়ক পার্বণ বারোয়ারি পুজো ছেলে ধরা ক্রিশ্চানে হুজুগ, সাতপেয়ে গরু, দরিয়াই ঘোড়া লখনৌ এর বাদশা এবং দ্বিতীয় ভাগের রথ, দুর্গোৎসব রামলীলা প্রভৃতির আলোচনা রয়েছে।
5) নীলদর্পণ নাটকের প্রধান আলোচ্য বিষয় কি?
উত্তর: নীলদর্পণ নাটকে তৎকালীন বঙ্গসমাজ এ নীলচাষীদের অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে - ক) নীলকর সাহেবরা বাংলা দরিদ্র চাষীদের নীলচাষে বাধ্য করে। খ) নীল চাষ করে চাষীদের ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। গ) নীল চাষ না করলে নীলকর সাহেবরা চাষীদের উপর সীমাহীন অত্যাচার চালায়।
6) প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্য বাদী দ্বন্দ্ব কি ?
উত্তর: ভারতে প্রাচ্য না প্রাশ্চাত্য পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করা উচিত এই প্রশ্ন কে কেন্দ্র করে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক এর শাসনকালে জনশিক্ষা কমিটির সদস্যরা দুটি পৃথক দলে বিভক্ত হয়ে যায়। একদল প্রাচ্য পদ্ধতিতে এবং অপর দল পাশ্চাত্য পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের পক্ষে মত দেন। দুটি দলের এই দ্বন্দ্ব প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্য বাদী দ্বন্দ্ব নামে পরিচিত।
7) কে, কি উদ্দেশ্যে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: লর্ড ওয়েলেসলি 1800 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল ভারতে ব্রিটিশ প্রশাসনে চাকরিরত যুবকদের প্রাচ্যবিদ্যা বিষয়ক জ্ঞান দান করা।
8) মেকলে মিনিট কি বলা হয় ?
উত্তর: মেকলে মিনিট এর বলা হয় যে- ক) প্রাচ্য শিক্ষা পদ্ধতির তুলনায় নিকৃষ্ট। খ) প্রাচ্যের সভ্যতার দুর্নীতিগ্রস্ত ও অপবিত্র। গ) তাই এদেশের পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তিত হওয়া উচিত। ঘ) এদেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্ত দের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটালে ক্রমনিম্ন পরিস্রুত নীতি বা চুঁইয়ে পড়া নীতি অনুসারে তা ক্রমশ সাধারণ দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।
9) উডের ডেসপ্যাচ কি?
উত্তর: বোর্ড অফ কন্ট্রোল সভাপতি চার্লস উড 1854 খ্রিস্টাব্দে শিক্ষা বিষয়ক একটি নির্দেশনামা প্রকাশ করেন যা উডের ডেসপ্যাচ বা নির্দেশনামা নামে পরিচিত।
উডের ডেসপ্যাচয়ে যেসব সুপারিশ করা হয় সেগুলি হল- ক) একটি পৃথক শিক্ষা দপ্তর গঠন, খ) কলকাতা, মুম্বাই, মাদ্রাজের একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, গ) শিক্ষক-শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলন, ঘ) উচ্চশিক্ষায় ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব বৃদ্ধি, ঙ) স্ত্রী শিক্ষার প্রসার প্রভৃতি ।
10) উডের ডেসপ্যাচ কে ম্যাগনাকার্টা বলা হয় কেন?
উত্তর: উডের ডেসপ্যাচ এর উপর ভিত্তি করে ভারতে পাশ্চাত্য ধাঁচের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে ওঠে । এজন্য একে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ম্যাগনাকার্টা বা মহাসনদ বলা হয় ।
11) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কয়টি বালিকা বিদ্যালয়ের উল্লেখ করো ।
উত্তর: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নারী শিক্ষার প্রসারে বেশ কয়েকটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন । এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ক) 1849 খ্রিস্টাব্দে ড্রিংক ওয়াটার বেথুন এর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় । খ) নদীয়া, বর্ধমান, হুগলি ও মেদিনীপুর জেলায় প্রতিষ্ঠা 35 টি বালিকা বিদ্যালয় ।
12) বাংলা ভাষায় প্রথম আত্মজীবনী কোনটি? এটি কার রচনা?
উত্তর: বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম আত্মজীবনী গ্রন্থ হল 'আমার জীবন'। এর রচয়িতা হলেন রাসসুন্দরী দেবী ।
13) রাজা রামমোহন রায় কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানের নাম লেখ।
উত্তর: রাজা রামমোহন রায় কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান ছিল - আত্মীয় সভা (1815 খ্রিস্টাব্দে), বেদান্ত কলেজ (1826 খ্রিস্টাব্দ), ব্রাহ্মসভা (1828) খ্রিস্টাব্দ প্রভৃতি ।
14) হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠায় কাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল?
উত্তর: হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠায় রাজা রাধাকান্ত দেব, ডেভিড হেয়ার, বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায়, স্যার হাইড ইস্ট প্রমুখের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ।
15) ড্রিংক ওয়াটার বেথুন সাহেব কেন স্মরণীয়?
উত্তর: ব্রিটিশ কর্মচারী ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুন স্মরণীয় কারণ - ক) তিনি বাংলার মেয়েদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে রামগোপাল ঘোষ এবং দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় প্রমুখ সঙ্গে যোগাযোগ করেন। খ) তিনি 1849 খ্রিস্টাব্দে 7th মে হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ভারতের প্রথমে বালিকা বিদ্যালয়টি বর্তমানে বেথুন স্কুল এবং কলেজ টি বেথুন কলেজ নামে পরিচিত।
16) কলকাতা মেডিকেল কলেজের অবদান কি?
উত্তর: ভারতে আধুনিক পাশ্চাত্য চিকিৎসা বিদ্যার প্রসারে কলকাতা মেডিকেল কলেজের অবদান ছিল অসামান্য। ক) পন্ডিচেরির পর কলকাতা মেডিকেল কলেজ হলো এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় কলেজ যেখানে ইউরোপীয় চিকিৎসাবিদ্যা শেখানো হতো। খ) এই কলেজ থেকে চিকিৎসা বিদ্যা শিখে বহু ডাক্তার ও নার্স ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে চিকিৎসার কাজে নিযুক্ত হয়। এই কলেজেই প্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করেন মধুসূদন গুপ্ত।
17) আধুনিক শিক্ষার প্রসারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ভূমিকা কি ছিল ?
উত্তর: বাংলা তথা ভারতে আধুনিক শিক্ষা প্রসারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে-
ক) দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা দান শুরু করে। খ) ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিশ্ববিদ্যালয় একদা উচ্চ শিক্ষার প্রসার নিয়ন্ত্রণ করত।
গ) ভারতীয় শিক্ষা, বিজ্ঞান, রাষ্ট্রনীতি প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ে এখানে উন্নত শিক্ষাদান করা হত ।
বিশ্লেষণধর্মী উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী : প্রতিটি প্রশ্নের মান 4
1) উডের ডেসপ্যাচ সম্পর্কে কি জানো ?
উত্তর: লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক এর আমলে পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠান পাঠক্রম ও গঠন রীতিতে কোন সামঞ্জস্য ছিল না। এই পরিস্থিতিতে বোর্ড অফ কন্ট্রোল সভাপতি চার্লস উড 1854 খ্রিস্টাব্দে শিক্ষা বিষয়ক একটি নির্দেশনামা প্রকাশ করেন। এটি উডের ডেসপ্যাচ বা নির্দেশনামা নামে পরিচিত।
ক) সুপারিশ: উডের ডেসপ্যাচ এর সুপারিশ করা হয় সেগুলি হল-
- সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থাকে পাঁচটি শ্রেণীবিভাজন।
- দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও প্রাথমিক স্কুল, মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা।
- কলকাতা, মুম্বাই, মাদ্রাজ একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত।
- একটি পৃথক শিক্ষা দপ্তর গঠন।
- উচ্চশিক্ষা সর্বোচ্চ কর্তা হিসেবে দিরেক্টর অফ পাবলিক ইন্সট্রাকশন পথ সৃষ্টি।
- শিক্ষক শিক্ষণ ব্যবস্থা চালু।
- সাধারণ শিক্ষায় মাতৃভাষার ব্যবহার।
- উচ্চশিক্ষায় ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব বৃদ্ধি।
- স্ত্রী শিক্ষার প্রসার বৃদ্ধি প্রভৃতি।
খ) মহাসনদ: উডের নির্দেশনামা বা ডেসপ্যাচ এর উপর ভিত্তি করে ভারতে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। এই জন্য এই নির্দেশ নামা কে ভারতের পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ম্যাগনাকার্টা বা মহাসনদ বলা হয়।
2) নারী শিক্ষার প্রসারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কী ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন ?
উত্তর: উনিশ শতকের সূচনা লগ্ন পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক বিধিনিষেধের ফলে বাংলায় নারী শিক্ষা প্রসারে তো হয়নি। নারী শিক্ষার প্রসারে ভারতীয়দের মধ্যে সর্বপ্রথম ব্যাপক ও গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছিলেন ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
ক) বিদ্যাসাগরের উপলব্ধি: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উপলব্ধি করেন যে নারী জাতির উন্নতি না ঘটলে বাংলা সমাজ ও সংস্কৃতির প্রকৃত উন্নতি সম্ভব নয়। এজন্য তাদের মধ্যে শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটানো দরকার।
খ) প্রাথমিক উদ্যোগ: মেয়েদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠার বিদ্যাসাগরের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ ছিল ড্রিঙ্কওয়াটার বিটন এর সঙ্গে যৌথভাবে কলকাতায় 1849 খ্রিস্টাব্দে হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। বিদ্যাসাগর 1857 খ্রিস্টাব্দের বর্ধমান জেলায় মেয়েদের জন্য একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
গ) চূড়ান্ত উদ্যোগ: গ্রামাঞ্চলে নারীদের মধ্যে শিক্ষার প্রসারেও বিদ্যাসাগর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি বাংলার বিভিন্ন জেলায় স্ত্রী শিক্ষা বিধায়নী সম্মিলনী প্রতিষ্ঠা করেন। এগুলিতে 13 হাজার ছাত্রী পড়াশোনা করত। তার ব্যক্তিগত ব্যয়ে বিদ্যালয়গুলো চলত।
ঘ) পরবর্তী উদ্যোগ: বিদ্যাসাগর পরবর্তীকালে বিভিন্ন স্থানে আরো কয়েকটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। মা ভগবতী দেবী স্মৃতিতে বিদ্যাসাগর 1890 খ্রিস্টাব্দের নিজ গ্রাম বীরসিংহ ভগবতী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
3) শিক্ষা বিস্তারে ড্রিংক ওয়াটার বেথুন এর ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করো ।
উত্তর: জন এলিয়ট ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুন সাহেব ছিলেন ভারতে একজন ব্রিটিশ কর্মচারী। তিনি উনিশ শতকে বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
ক) মাতৃভাষার গুরুত্ব: রাজা রামমোহন রায়ের মতো মনীষীও যখন ইংরেজি শিক্ষার পক্ষে বক্তব্য রাখেন তখন বেথুন সাহেব গ্রাম বাংলার সাধারন শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাতৃভাষার শিক্ষার প্রসারে গুরুত্ব দেন । বেথুন সাহেবের মতে মাতৃভাষার মাধ্যমে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটানো সম্ভব।
খ) নারী শিক্ষা: উনিশ শতকে এদেশে নারী শিক্ষার প্রসারে বেথুন ছিলেন অগ্রগণ্য। তিনি বাংলার মেয়েদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে রামগোপাল ঘোষ, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মদনমোহন তর্কালঙ্কার প্রমুখের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পন্ডিত গুলমোহর বিদ্যালঙ্কার এর লেখা নারী শিক্ষা বিষয়ক একটি পুস্তিকা বেথুন সাহেব অর্থব্যয় ছেপে বিলি করেন।
গ) স্কুল প্রতিষ্ঠা: নারীদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে বেথুন সাহেব কলকাতায় 1849 খ্রিস্টাব্দে হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি তার যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বালিকা বিদ্যালয় কে দান করে দেন। বিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের আবেদন বলেন যে, "আমি বিশ্বাস করি আজকের দিনটি একটি বিপ্লবের সূচনা করতে যাচ্ছে ।"
ঘ) কলেজ প্রতিষ্ঠা: বাংলার নারীদের মধ্যে আধুনিক উচ্চ শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে বেথুন সাহেব কলকাতায় একটি মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠান করেন। এটি বর্তমানে বেথুন কলেজ নামে পরিচিত । মাত্র একজন ছাত্রী কাদম্বিনী বসু কে নিয়ে এই কলেজের পঠন পাঠন শুরু হয় । বেথুন কলেজ হলো ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম মহিলা কলেজ ।
ঙ) অন্যান্য কৃতিত্ব: বেথুন সাহেব কলকাতা পাবলিক লাইব্রেরির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন । তিনি বাংলা ভাষার গ্রন্থ অনুবাদের কাজেও বিশেষ আগ্রহী ছিলেন ।
4) নারী সমাজের উন্নতির লক্ষ্যে বামাবোধিনী পত্রিকা উদ্যোগ নিয়েছিল ?
উত্তর: ব্রাহ্ম নেতা কেশবচন্দ্র সেনের অনুগামী উমেশচন্দ্র দত্ত 1863 খ্রিস্টাব্দে বামাবোধিনী পত্রিকা নামে একটি মাসিক পত্রিকার প্রকাশ শুরু করেন। বাংলা নারী সমাজের উন্নতির লক্ষ্যে এই পত্রিকা বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়। যেমন -
ক) সামাজিক সংস্কার: উনিশ শতকের এদেশের হিন্দু সমাজে মেয়েরা বাল্যবিবাহ, পণ প্রথা প্রভৃতির শিকার ছিল । এসব সামাজিক প্রথার বিরুদ্ধে এবং নারীদের মন থেকে যাবতীয় কুসংস্কার ও সন্দেহ দূর করার উদ্দেশ্যে বামাবোধিনী পত্রিকা নিয়মিত প্রচার চালিয়ে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা চালায় ।
খ) শিক্ষার প্রসার: উনিশ শতকেও সাধারন মানুষ নারী শিক্ষা কে বিশ্বের সমর্থন করত না । এই অবস্থায় বামাবোধিনী পত্রিকার নারী শিক্ষার সমর্থনে নারী সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নিয়মিত প্রচার চালায় ।
গ) নারীর অধিকার: উনিশ শতকেও নাড়িয়া মূলত বাড়ির অন্দরমহলে আবদ্ধ ছিল । পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের অধিকার ও মর্যাদা আদায়ের কোনো সুযোগ ছিল না । বামাবোধিনী পত্রিকা নারীদের সামাজিক অধিকার ও মর্যাদা প্রদানের লক্ষ্যে নিয়মিত প্রচার চালায় । নারী অধিকারের উদার সমর্থকদের নিয়ে এই পত্রিকার সম্পাদকমন্ডলী গড়ে তোলা হয় ।
ঘ) প্রগতিশীলতা: নারীরা যাতে নিজস্ব লেখনীর মাধ্যমে নিজেদের মতামত জানাতে পারে, সে উদ্দেশ্যে বামাবোধিনী পত্রিকা গোষ্ঠী স্বনামে বা বেনামে নারীদের এই পত্রিকায় নিয়মিত লেখার সুযোগ করে দেয় । পত্রিকা গোষ্ঠীর নারী জাতির স্বার্থ রক্ষা ও সামাজিক অগ্রগতির উদশ্যে বিভিন্ন বইপত্রও পত্রিকা প্রকাশ করে ।
5) নব্য বঙ্গ গোষ্ঠীর নেতৃত্বে সমাজ সংস্কার আন্দোলন ব্যাখ্যা করো ।
উত্তর: হাজার 900 তাকে হিন্দু কলেজের অধ্যাপক ডিরোজিওর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের সক্রিয় সমাজ সংস্কার আন্দোলন গড়ে তোলে তার নব্যবঙ্গ আন্দোলন বা ইয়ং বেঙ্গল মুভমেন্ট নামে পরিচিত ।
ক) অনুগামী ছাত্রদল: হিন্দু কলেজের ছাত্রদরদী জনপ্রিয় অধ্যাপক ডিরোজিও প্রভাবে তার অনুগামী ছাত্ররা লক, হিউম্, টম, রুশো, ভলতেয়ার প্রমূখ দার্শনিকদের মতবাদ ও ফরাসি বিপ্লবের চিন্তা ধারার সঙ্গে পরিচিত হয় ছাত্রদের মধ্যে স্বাধীন চিন্তা ও যুক্তিবাদের বিকাশ ঘটানোর উদ্দেশ্যে ডিরোজিও অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন 1827 খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন ।
খ) আন্দোলন: ডিরোজিওর নেতৃত্বে তার অনুগামী ছাত্রদল হিন্দু ধর্মের অস্পৃশ্যতা, জাতিভেদ প্রথা, সতীদাহ প্রথা, মূর্তিপূজা প্রভৃতি কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সরব হয় । তারা নারীশিক্ষা, নারী স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রভৃতি স্বপক্ষে প্রচার চালান।
গ) উগ্রতা: নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীর আন্দোলন শীঘ্রই উগ্র হয়ে ওঠে। তারা নিষিদ্ধ মাংস ভক্ষণ করে, উপবীত ছিঁড়ে, ব্রাহ্মণ পুরোহিতদের চেঁচিয়ে ' আমরা গরুর মাংস খাই ' বলে, কালীঘাটের মন্দিরের মা কালীর উদ্দেশ্যে ' গুড মর্নিং ম্যাডাম ' বলে সমাজে অস্থির আলোড়ন সৃষ্টি করে।
ঘ) পরিণাম: নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীর উগ্রতায় আতঙ্কিত অভিভাবকরা হিন্দু কলেজ থেকে তাদের সন্তানদের ছাড়িয়ে দিতে শুরু করলে কলেজ কর্তৃপক্ষ এর জন্য ডিরোজিও কে দায়ী করে তাকে কলেজ থেকে বিতাড়িত করেন। এর কিছুদিন পরেই তিনি জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং ডিরোজিওর মৃত্যু হয়।
ঙ) অনুগামীদের উদ্যোগ: ডিরোজিও মৃত্যুর পর তার অনুগামী ছাত্রদল সংস্কার আন্দোলনের আদর্শ কে এগিয়ে নিয়ে যান। এই ছাত্রদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন রামগোপাল ঘোষ রামতনু লাহিড়ী, কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, রসিক কৃষ্ণ মল্লিক, প্যারীচাঁদ মিত্র, দক্ষিণা রঞ্জন মুখোপাধ্যায় প্রমুখ ।
সাত বা আটটি বাক্যে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান 8
প্রাচ্য-পাশ্চাত্য শিক্ষা বিষয়ক দ্বন্দ্ব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
উত্তরঃ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অষ্টাদশ শতকের শেষভাগে ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকায় নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে । এরপরে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার নীতি নির্ধারণের বিষয়টি তাদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
1) দ্বন্দ্বের সূত্রপাত: ব্রিটিশ কোম্পানি ভারতে জন শিক্ষার প্রসারের উদ্যোগ নিলে এদেশে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটানো উচিত সে প্রশ্ন কে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
2) রামমোহন রায়ের উদ্যোগ: ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সনদ আইনের দ্বারা ভারতীয় জনশিক্ষার জন্য প্রতিবছর এক লক্ষ টাকা ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নিলে রাজা রামমোহন রায় সরকারকে এক পত্রের দ্বারা এই টাকা ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা অর্থাৎ ইংরেজি ও আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য অনুরোধ জানান ।
3) প্রাচ্য-পাশ্চাত্যবাদী দ্বন্দ্ব: বেন্টিং এর শাসনকালে ভারতের প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করা উচিত এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে জনশিক্ষা কমিটির সদস্যরা কার্যত প্রাচ্যবাদী বা ওরিয়েন্টালিস্ট এবং পাশ্চাত্য বাদী বা অ্যাংলিসিস্ট নামে দুটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়েন । এভাবে সরকারি শিক্ষানীতিতে নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যবাদীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
4) প্রাচ্যবাদী: প্রাচ্যবাদী রা ভারতের প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য ও দর্শন বিষয়ে শিক্ষাদানের পক্ষপাতী ছিলেন । প্রাচ্যবাদী সমর্থকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন এইচটি প্রিন্সেস, কোল ব্রুক, উইলসন প্রমূখ ।
5) পাশ্চাত্য বাদী: পাশ্চাত্য বাদীর ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা অর্থাৎ ইংরেজি এবং আধুনিক বিজ্ঞান প্রভৃতি শিক্ষার প্রসারে দাবি জানান। পাশ্চাত্য বাদীর সমর্থকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মেকলে, আলেকজান্ডার ডাফ, স্যান্ডার্স, কলভিন প্রমূখ ।
6) মেকলে মিনিট : বেন্টিঙ্ক এর আমলে জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি মেকলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের দাবি জানিয়ে 1835 খ্রিস্টাব্দের 2 ফেব্রুয়ারি বড়লাট লর্ড বেন্টিং এর কাছে একটি প্রস্তাব দেন যা মেকলে মিনিট নামে পরিচিত । অবশেষে পাশ্চাত্যবাদী রাজি হন এবং সরকার ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারে নীতি নয় ।
তোমাদের কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা তোমরা এই পোস্টের নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে জানাতে পারো ।
আমাদের লেটেস্ট পোস্টের আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করতে পারো । আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করার জন্য পাশের লিংকটিতে ক্লিক কর: Pothon Pathon Facebook Page
আমাদের Telegram Channel এ জয়েন হতে পাশের লিংক এ ক্লিক করন: Pothon Pathon Telegram
Post a Comment
Please put your valuable comments.