মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নোত্তর | গল্প : জ্ঞানচক্ষু | WBBSE Madhyamik Bengali Notes | Gyanchokkhu Notes

wbbse-madhyamik-bengali-notes-gyanchokkhu-story

প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, পঠন পাঠন অনলাইন এর ওয়েবসাইটে তোমাদের স্বাগত জানাই | আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি মাধ্যমিক বাংলার জ্ঞানচক্ষু গল্পের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর নিয়ে । 

WBBSE Madhyamik Bengali Notes

মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নোত্তর

গল্প : জ্ঞানচক্ষু


বহুমুখী উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর (MCQ)

১. কাকে দেখে তপনের চোখ মার্বেল এর মতন হয়ে গেল ?

(ক) দিদি

(খ) নতুন মেসো মশাই

(গ) বাবা

(ঘ) নতুন পিসেমশাই

উত্তর : (ঘ) নতুন পিসেমশাই


২. নতুন মেসো মশাই ছিলেন একজন –

(ক) লেখক

(খ) গায়ক

(গ) শিক্ষক

(ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তর : লেখক


৩. "ছোটমাসি সেই দিকে ধাবিত হয়।" ছোট মাসি ধাবিত হয় –

(ক) ছোট মেসোর দিকে

(খ) রান্না ঘরের দিকে

(গ) তপনের দিকে

(ঘ) ছাদের দিকে

উত্তর : (ক) ছোট মেসোর দিকে

 

৪. তপনের লেখা গল্প তার মেসোমশাই কে দিয়েছিল –  

(ক) মা

(খ) বড় মাসী

(গ) ছোট মাসী

(ঘ) বাবা

উত্তর : (গ) ছোটো মাসী


৫. "রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।" এখানে জহুরী বলা হয়েছে –

(ক) তপনের মাসিকে

(খ) তপনের বাবাকে

(গ) তপনের মাকে

(ঘ) তপনের নতুন মেসো মশাই কে

উত্তর : (ঘ) তপনের নতুন মেসো মশাই কে


৬. "মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা" উপযুক্ত কাজটা হলো –

(ক) তপনের গল্পটা ছাপিয়ে দেওয়া

(খ) তপনের গল্পটা কারেকশন করে দেওয়া

(গ) তপনকে লেখায় উৎসাহ দেওয়া

(ঘ) তপনকে গল্প লেখার নিয়ম কানুন শিখিয়ে দেওয়া

উত্তর : (ক) তপনের গল্পটা ছাপিয়ে দেওয়া


৭. মেসোমশাই কোন পত্রিকার সম্পাদক কে চিনতেন ?

(ক) সাহিত্যচর্চা

(খ) ভারতী

(গ) শুকতারা

(ঘ) সন্ধ্যা তারা

উত্তর : (ঘ) সন্ধ্যাতারা


৮. ছোট মেসো মশাই তপনের গল্প হাতে পেয়ে কি বলেছিলেন ?

(ক) আরো একটা গল্প লেখার কথা

(খ) আরো দুটো গল্প দেওয়ার কথা

(গ) এই গল্পটা একটু কারেকশন করার কথা

(ঘ) কোনটাই নয়

উত্তর : (গ) এই গল্পটা একটু কারেকশন করার কথা


৯. ছোটমেসো শ্বশুরবাড়িতে কিছুদিন ছিলেন, কারণ –

(ক) ছোটমাসির শরীর ভালো ছিল না

(খ) তাঁর কলেজের ছুটি চলছিল

(গ) কিছু জরুরী কাজ ছিল তাঁর

(ঘ) কোনটাই নয়

উত্তর : (খ) তাঁর কলেজের ছুটি চলছিল


১০. লেখার আসল মূল্য বুঝবে –

(ক) ছোটমাসি

(খ) ছোটমেসো

(গ) বড়মেসো

(ঘ) তপনের মা

উত্তর : (খ) ছোটমেসো


১১. "যেনো নেশায় পেয়েছে।"—তপন কে যে নেশায় পেয়েছে তা হল –

(ক) টিভি দেখার

(খ) গল্পের বই পড়ার

(গ) ক্রিকেট খেলার

(ঘ) গল্প লেখার

উত্তর : (ঘ) গল্প লেখার


১২. নিজের গল্প পড়ে তপনের কিরূপ অবস্থা হয়েছিল ? —

(ক) আনন্দে আপ্লুত হয়েছিল

(খ)  গায়ে কাঁটা দিয়ে ছিল

(গ) চোখে জল এসেছিল

(ঘ) অবাক হয়ে গিয়েছিল

উত্তর : (খ) গায়ে কাঁটা দিয়ে ছিল


১৩. "তা ওরকম একটি লেখক মেসো থাকা মন্দ নয়।" কথাটি বলেছেন তপনের —

(ক) বাবা

(খ) মেজকাকু

(গ) ছোটকাকু

(ঘ) তপনের মাসি

উত্তর : (খ) মেজোকাকু


১৪. চায়ের টেবিলে তপনের গল্প নিয়ে কথা ওঠে — 

(ক) সকালে

(খ) বিকালে

(গ) রাতে

(ঘ) সন্ধ্যায়

উত্তর : (খ) বিকালে


১৫. "এদেশে কিছু হবে না"— একথা বলেন –

(ক) তপন

(খ) ছোটমেসো

(গ) ছোটমাসি

(ঘ) বাবা

উত্তর : (খ) ছোটোমেসো


১৬. গল্প লেখার জন্য তপনের বাড়িতে তপনের নাম হয়ে গেছে –

(ক) সাহিত্যিক, কথাশিল্পী

(খ) কবি, গল্পকার, কথাশিল্পী

(গ) কবি, সাহিত্যিক, কথাশিল্পী

(ঘ) সাহিত্যিক

উত্তর : (গ) কবি, সাহিত্যিক, কথাশিল্পী


১৭. "মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা"– উপযুক্ত কাজটি হল –

(ক) তপনকে গল্প লেখা শেখানো

(খ) তপনকে গল্প লিখে দেওয়া

(গ) তপনের গল্পের সংশোধন করে দেওয়া

(ঘ) তপনের গল্প ছাপিয়ে দেওয়া

উত্তর : (ঘ) তপনের গল্প ছাপিয়ে দেওয়া


১৮."কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল!"– কথাটা হল –

(ক) তপনের মামা একজন লেখক

(খ) তপনের লেখা ছাপা হয়েছে

(গ) তপনের মেসো একজন লেখক

(ঘ) সবাই তপনের গল্প শুনে হাসছে

উত্তর : (গ) তপনের মেসো একজন লেখক


১৯. তপনের নতুন মেসোমশাই কলেজের –

(ক) রিডার

(খ) শিক্ষক

(গ) প্রফেসর

(ঘ) মাস্টার

উত্তর : (গ) প্রফেসর


২০. "আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম।"– কথাটি বলেছেন — 

(ক) বাবা

(খ) মেজোকাকু

(গ) ছোটমামা

(ঘ) বড়োমেসো

উত্তর : (খ) মেজোকাকু


২১.গল্প লেখক তপনের সম্পূর্ণ নাম –

(ক) তপন রায়

(খ) তপন দাস

(গ) তপন কুমার দাস

(ঘ) তপন কুমার রায়

উত্তর : (ঘ) তপন কুমার রায়।


২২. "কই পড় ? লজ্জা কী ? – কথাটি বলেছিলেন–

(ক) বাবা

(খ) মা

(গ) কাকা

(ঘ) ছোটোমাসি

উত্তর : (খ) মা


২৩. "এ দেশের কিছু হবে না"– এ কথা বলেন–

(ক) তপন

(খ) ছোটো মেসো

(গ) ছোটো মাসি

(ঘ) বাবা

উত্তর : (খ) ছোটো মেসো। 


২৪. "তপনের হাত আছে।" – কথাটির অর্থ হল—

(ক) হস্তক্ষেপ

(খ) ভাষার দখল

(গ) জবরদস্তি

(ঘ) মারপিট

উত্তর : (খ) ভাষার দখল


২৫. "ছোটো মাসি যেনো একটু মুরুব্বি মুরুব্বি হয়ে গেছে," – এখানে মুরুব্বি শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে –

(ক) শিক্ষক অর্থে

(খ) গুরুদেব অর্থে

(গ) বোদ্ধা অর্থে

(ঘ) লেখক অর্থে

উত্তর : (গ) বোদ্ধা অর্থে


২৬. ছোটো মাসি ডিমভাজার সঙ্গে কি খায়?

(ক) চা

(খ) কফি

(গ) দুধ

(ঘ) আলুভাজা

উত্তর : (ক) চা


অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর :

১. "এমন সময় ঘটল সেই ঘটনা" — কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর : ছোটো মাসি আর মেসোমশাই সন্ধ্যাতারা পত্রিকার নিয়ে তপনদের বাড়িতে আসার কথা বলা হয়েছে।


২. "বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের" কেন তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠে?

উত্তর : তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসা ছোট মাসি আর মেসোমশায়ের কাছে সন্ধ্যাতারা পত্রিকা দেখে বুকের রক্ত ছলকে ওঠে কারণ তার গল্প প্রকাশের কথা ছিল ।


৩. "পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনা ঘটে?"— কোন ঘটনাকে অলৌকিক বলা হয়েছে?

উত্তর : ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত তপনের গল্প হাজার হাজার ছেলের হাতে ঘুরছে, এই ঘটনাকে বলা হয়েছে।


৪. "তা ঘটেছে সত্যিই ঘটেছে।"– কি ঘটেছে?

উত্তর : তপনের নিজের লেখা গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপা হয়েছে এটি হলো ঘটনা।


৫. সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায় এরপর শোরগোলের কারণ কি ছিল?

উত্তর : সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল কারণ সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় তপনের গল্প ছাপা হয়েছিল ।


৬. "ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে ।" কোন কথাটা?

উত্তর : তপনের গল্প কাঁচা হাতে লেখা হওয়ায় তাতে একটু একটু কারেকশন করতে হয়েছে তপনের মেসোমশাই এই কথাটা ছড়িয়ে পড়ে ।


৭. "আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম"— কোন চেষ্টার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর : তপনের মেজকাকু বলেছিলেন যে তপনের মেসোমশাই এর মত কেউ থাকলে তারাও গল্প লেখার চেষ্টা করতেন।


৮. "তপন আর পড়তে পারে না।"— কেন তপন আর পড়তে পারে না?

উত্তর : নিজের প্রকাশিত গল্প পড়তে গিয়ে তপন যখন দেখে মেশোমশাই তার পুরোটাই কারেকশন করে দিয়েছেন তখনই সে আর পড়তে পারে না।


৯. "শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন"— তপনের সংকল্প কি ছিল?

উত্তর : তপন সংকল্প করেছিল যে, যদি কখনো লেখা ছাপাতে হয় তাহলে তপন নিজে গিয়ে তা পত্রিকায় দেবে।


১০. "আর কখনো শুনতে না হয়"— কাকে কি শুনতে না হয়?

উত্তর : তপন কে যেন আর কখনো শুনতে না হয়– "অমুক তপনের লেখা ছাপিয়ে দিয়েছে"।


১১. "যদি কখনো লেখা ছাপা দিন দেয় তো তপন নিজে গিয়ে দেবে" তপনের এমন সিদ্ধান্তের কারণ কি?

উত্তর : সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় তার নামে প্রকাশিত গল্পটির সঙ্গে তপন নিজের মূল লেখাটির কোন মিল পায়নি বলে তার এমন সিদ্ধান্ত।


১২. "গল্প ছাপা হলে যে ভয়ঙ্কর আহ্লাদ টা হবার কথা সেই আহ্লাদ টা খুঁজে পায়না।" উদ্দিষ্ট ব্যক্তির আহ্লাদিত হতে না পারার কারণ কি?

উত্তর : তপনের প্রথম গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপা হলে তার মেসোমশাই এর কৃতিত্বের কথাই বড় হয়ে ওঠে, তাই তপন আহ্লাদিত হতে পারে না ।



ব্যাখ্যা ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

১. "বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের"— প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ব্যাখ্যা লেখ।

উত্তর : মেসোর হাতে সন্ধ্যাতারা পত্রিকার দেখে তপনের এরূপ অবস্থা হয়েছিল। তপনের লেখা গল্পটি তার নতুন মেসো সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন বলে নিয়ে গিয়েছিলেন । দীর্ঘদিন সেই অপেক্ষায় বসে ছিল, তারপর একসময় সে ভুলে গিয়েছিল গল্পটির কথা। এরপর হঠাৎই তার ছোট মাসি আর মেসো তাদের বাড়িতে বেড়াতে এলেন। তপন মেসোর হাতের সন্ধ্যাতারা পত্রিকা দেখতে পেল। তার গল্প ছাপা হয়েছে— এই প্রত্যাশাতেই তার বুকের রক্ত যেন চমকে উঠল।


২. "সবাই শুনতে চাইছে তবুও পড়ছিস না?"— কী শুনতে চাও আর কথা বলা হয়েছে ?তা না পড়ার কারণ কি?     (১+২)

উত্তর : সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপা হওয়া তপনের গল্পটি শুনতে চাওয়ার কথা বলা হয়েছে ।

❑❑ তপনের নতুন মেসো সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় তপনের গল্পটি ছাপিয়ে দিয়েছিল, সেটা নিয়ে তপনের বাড়িতে এলে সবার মধ্যে একটা শোরগোল পড়ে যায়। তপনের মা তাকে গল্পটি পড়ে শোনাতে বলেন। কিন্তু গল্পের কিছুটা অংশ পড়ে তপন অবাক হয়ে যায় কারণ গল্পটা এমন ভাবে কারেকশন করা হয়েছে যে  তার মধ্যে নিজের লেখা অংশটি খুঁজে পাচ্ছিল না। নতুন একটা গল্প বলেই তার মনে হয়েছিল। গভীর হতাশা যেন তাকে বাকরুদ্ধ করে দিয়েছিল। তাই মনের দুঃখে এবং হতাশায় গল্পটা আর পড়তে চায়নি।


৩. গল্প থেকে আসার পর যে আহ্লাদ হওয়ার কথা সে আহ্লাদ তপনের মধ্যে না হওয়ার কারণ কি ছিল?

উত্তর : তপনের ছোটমেসোর সহায়তায় সন্ধ্যাতারা পত্রিকার গল্প প্রকাশিত হলে চারিদিকে সবাই তার মেসোর মহত্ত্বের কথাই বলতে থাকে। মেসোমশাই না থাকলে কোনদিনই সন্ধ্যাতারা পত্রিকার সম্পাদক তপনের লেখা ছুঁয়েও দেখত না– এ কথা বলে অনেকে. এসব কথার মাঝখানে আসল যে লেখক, সে যেন কোথায় হারিয়ে যায়।  প্রত্যাশামতো লেখার প্রশংসা কেও করে না। তপনের যেনো কোন কৃতিত্ব নেই এমনকি গল্পটা এমন ভাবে কারেকশন করা হয়েছে তপন তার মধ্যে নিজস্বতাই খুঁজে পায়না। এইসব দেখে লেখা আসার পর যে আহ্লাদ হওয়ার কথা তার বিন্দুমাত্র তপনের মধ্যে লক্ষ্য করা যায় না।


৪. "তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন"— তপনের এরকম মনে হওয়ার কারণ কি ছিল?

উত্তর : ছোটমেসোমশাই এর উদ্যোগে সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় তপনের লেখা গল্প ছেপে বেরোলে, সে তার মাকে গল্পটি পড়ে শোনাতে যায়। সংশোধনের নামে ছোটগল্পে আগাগোড়াই বদলে দিয়েছেন। সে যে লেখাটা ছাপতে দিয়েছিল তার সঙ্গে ছেপে আসা লেখার কোন মিলই ছিল না। লজ্জায় অপমানে ভেঙে পড়লো তপন।  সে বুঝতে পারে তার লেখা কাঁচা হাতের, তবুও যদি সেই লেখায় ছাপা হতো তাহলে তার মনে আনন্দ জন্মাত। আর ছাপা না হলেও এতটা দুঃখ তার হত না।


৫. তপন তার লজ্জা কাটিয়ে কি পড়তে যায় এবং পড়তে গিয়ে সে কি দেখে?

উত্তর : বিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি নিয়ে একটি গল্প লিখেছিল এবং গল্পটির নাম রেখেছিল ' প্রথম দিন '। তপনের মেসোমশাই একজন লেখক এবং সন্ধ্যাতারা পত্রিকার সম্পাদককেও তিনি চিনতেন। তপনের গল্পটি সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন। পত্রিকায় ছাপা তপনের লেখাটি তার মা তাকে  পড়ে শোনাতে বললে প্রাথমিক লজ্জা ও জড়তাটুকু কাটিয়ে তপন পড়তে শুরু করে। পড়তে গিয়ে দেখে তার লেখাটা আগাগোড়াই তার ছোট মেসো কারেকশন করে দিয়েছেন। তপনের কাঁচা হাতে লেখা গল্পটি পুরোটাই তিনি বদলে নিজের পাকা হাতের গল্প তৈরি করে সেটা ছাপিয়ে দিয়েছেন।


বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর :

১. "সত্যিই তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিনটি এলো আজ?"— কোন দিনটির কথা এখানে বলা হয়েছে? দিনটি সম্পর্কে এই উচ্ছ্বাসের কারণ লেখো ।

উত্তর : প্রখ্যাত সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী রচিত "জ্ঞানচক্ষু" গল্পের তপনের নতুন মেসোমশাইয়ের মাধ্যমে সন্ধ্যাতারা পত্রিকার একটি গল্প লিখে পাঠিয়েছিলো। গল্পটি ছাপার অক্ষরের দেখার আশায় দিন গুনছিল তপন। তারপর একদিন তার ছোটমাসি আর মেসো তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। মেসোর হাতে সন্ধ্যাতারা পত্রিকার কে দেখে তপন চমকে ওঠে। এখানে মেসোর আগমনের এই বিশেষ দিনটির কথা বলা হয়েছে ।

 

❑❑ লেখক ছোটমেসোমশাই তপনের গল্পটিকে সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পর সে একপ্রকার নিশ্চিত হয়েছিল যে–তার গল্প ছাপা হবে না। তাই সন্ধ্যাতারা পত্রিকার হাতে ছোট মাসি আর মেসো কে আসতে দেখে তার বুকের রক্ত ছলকে উঠেছিল। স্বপ্ন পূরণের আশা আর নিরাশার মাঝে এসে আটকে পড়ে। জীবনের প্রথম  হাতের লেখা ছাপা হয়েছে তা নিয়ে তার মনে প্রশ্ন দেখা দেয়। যদি সত্যিই ছাপা হয় তাহলে দিনটি তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন হবে, এতে তার কোনো সন্দেহ নেই। অনেক দিনের ইচ্ছা হয়তো এবার পুরণ হতে চলেছে এই ভেবে একটু সংশয়কে সঙ্গী করে তপনের মন আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে ছিল।


২. "তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন" তপনের এই মনে হওয়ার কারণ গল্প কাহিনী অবলম্বনে আলোচনা করো।

উত্তর : প্রখ্যাত সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর "জ্ঞানচক্ষু" গল্পের তার নতুন মেসোমশাই কে দেখে লেখকদের সম্পর্কে তপনের কাল্পনিক ধারণা সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছিল। সে অবাক হয়েছিল এই দেখে যে লেখকরা একেবারেই সাধারণ মানুষ। তখন তার মনেও লেখক হওয়ার সাধ জেগে ওঠে এবং সে লিখে ফেলে তার জীবনের প্রথম গল্প "প্রথম দিন"। কৌশলে ছোটমাসির হাত দিয়ে সে গল্প পৌঁছে যায় মেসোমশাই এর কাছে। কিছু কারেকশনের কথা বললেও তপনের বিষয় ভাবনার মৌলিকতার কথা বলে সেটিকে ছপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তপনের মেসোমশাই। শুরু হয়ে যায় তপনের দিন গোনা। এক সময়ে পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম লেখা "প্রথম দিন"।  কিন্তু যা হতে পারতো "তার জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন" তাই হয়ে যায় "তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন"। ছাপার অক্ষরে নিজের যে লেখা প্রকাশকে তার 'অলৌকিক ঘটনা' বলে মনে হয়েছিল, তাই তাকে প্রায় বাক্যহীন করে দেয়। চারপাশে তপনের গল্পের প্রশংসার থেকেও তার মেসোমশাই এর কৃতিত্বই সবচেয়ে বেশি আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। 


৩. "শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন"— দুঃখের কারণ কি? সে কি ধরনের সংকল্প গ্রহণ করেছিল?

উত্তর : আশলতা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু গল্পের তপনের ভাবতো লেখকরা অন্য জগতের বাসিন্দা। ইতিমধ্যে  ছোটমাসির বিয়ে হয় একজন লেখক এর সঙ্গে। তখন তপন অনুভব করে তার বাবা কাকার মতোই তার মেসো একজন স্বাভাবিক মানুষ। তখন থেকেই তার মধ্যে চেপে বসে লেখক হওয়ার জেদ। একটি গল্প  লিখেও ফেলে, নাম রাখে "প্রথম দিন"। লেখক মেসো সেই গল্পটি সন্ধ্যাতারা নামক একটি বিখ্যাত পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। ছাপিয়েও দেন। ছাপানো লেখা হাতে পেয়ে তপন হতভম্ব হয়ে যায়। সে দেখতে পায় পুরো লেখাটা নতুন মেসোমশাই সংশোধন করে দিয়েছেন। তপন লেখার মধ্যে নিজেকে আর খুঁজে পায় না। এতে অপমানিত এবং দুঃখিত বোধ করে। নিজের সৃষ্টির এই আগাগোড়া পরিবর্তনই তার দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।


❑❑ নিজের গল্পের এই আমূল পরিবর্তন দেখে লজ্জায় ও দুঃখে তপন এক দৃঢ় সংকল্প করে। সে বুঝতে পারে নিজের লেখা কাঁচা হলেও অন্যের দ্বারা সংশোধন করা উচিত নয় এবং এই প্রতিজ্ঞা করে এবার থেকে সে নিজে গিয়ে পত্রিকার সম্পাদকের হাতে লেখা দিয়ে আসবে। নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন যেন তাকে আর কখনোই পড়তে না হয়।


৪. "তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই, তার থেকে অপমানের।" দুঃখ আর অপমানের কারন কি? এই দুঃখ আর অপমান দূর করতে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কি সংকল্প গ্রহণ করেছিলো ?

অথবা

দুঃখ আর অপমানের কারন কি ? এই দুঃখ আর অপমান থেকে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কি শিক্ষালাভ করেছিল?

উত্তর : প্রখ্যাত সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী রচিত "জ্ঞানচক্ষু" গল্পে, তপনের লেখক হতে চেয়েছিল কিন্তু তার ধারণা ছিল লেখকরা সাধারণ মানুষ থেকে নন, আকাশ থেকে পড়া কোন অলৌকিক প্রতিভা। তপনের এই ধারণা দূর হয় তার নতুন মেসোমশাই কে দেখে। কারণ তিনিও একজন লেখক ছিলেন। এবার তপন লিখে ফেলে একটি গল্প এবং তার মেসোমশাই প্রতিশ্রুতি দেন সন্ধ্যাতারা নামক বিখ্যাত পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন। কিন্তু ছাপানো গল্পটা পড়ে তপন হতবাক হয়ে যায়। গল্পের প্রতিটি লাইন নতুন তার মধ্যে তার নিজস্বতা খুঁজে পায়না। যেন তার মনে হয় লেখাটা তাই নয়। নিজের লেখার আমূল পরিবর্তন দেখে দুঃখ পায়, অপমানিত বোধ করে। 

❑❑ এই অপমান থেকে তপন নতুন এক অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল। সংকল্প করেছিল, ভবিষ্যতে সে যদি কখনো কোনো লেখা ছাপাতে দেয় তাহলে সে নিজেই পত্রিকার সম্পাদকের কাছে দিয়ে আসবে। তাতে তার লেখা ছাপানো হোক বা না হোক তার কোন দুঃখ নেই। কেউ তো আর বলতে পারবেনা "অমুক তপনের লেখা ছাপিয়ে দিয়েছে"। আত্মমর্যাদাসম্পন্ন তপন আরো বুঝেছিল, অপরের সাহায্য নিয়ে কখনওই লেখক হওয়া যায় না।


৫. "গল্প ছাপা হলে যে ভয়ঙ্কর আল্লাদটা হওয়ার কথা, সে আহ্লাদটা খুঁজে পায় না।"– কার, কোন গল্প, কোথায় ছাপানো হয়েছিল? গল্প ছাপা হলেও সে আহ্লাদ খুঁজে পায়নি কেন?

উত্তর : আশাপূর্ণা দেবীর "জ্ঞানচক্ষু" গল্পে তপনের একটি গল্প লিখেছিল। সেই গল্পটি তপনের নতুন মেসোর সহায়তায় সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ।

 

❑❑ তপনের বয়স কিশোর। তার নবীন আবেগের প্রকাশ ঘটে তার প্রথম লেখা "প্রথম দিন" নামক গল্পতে। গল্পটি সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। মেসোর হাতে পত্রিকাটির দেখে তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠে। পত্রিকার সূচিপত্রে তার নাম দেখেই নতুন আশা, তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তপন গল্পটি পড়ে চমকে ওঠে। বাড়ির সবাই বলে – "বারে, চমৎকার লিখেছে তো।" কিন্তু তপনের মেসোমশাই মৃদু হেসে বলেন, " তা একটু আধটু কারেকশন করতে হয়েছে অবশ্য। নেহাত কাঁচা হাত তো।" তপন এর মাসি ছাড়া আর কেউ তেমন বাহবা দেননি, বরং তার বাবা বলেন– "তা নইলে ফট করে একটা লিখল, আর ছাপা হলো।" অন্যদিকে তপনের মেজ কাকু মন্তব্য করেন – "ওরকম একটি লেখক মেসো থাকা মন্দ নয়।  আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম।" বাড়ির কর্তা স্থানীয় ব্যক্তিদের এইসব কথার মধ্যে একটা নিরুত্তাপ উদাসীন লুকিয়ে ছিল। এই কারণেই নিজের লেখা ছাপা হওয়ার যেমন আহ্লাদ হওয়ার কথা তা তপন খুঁজে পাইনি।


৬. আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু গল্পের নামকরণ কতটুকু সার্থক হয়েছে লেখ।

উত্তর : আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু গল্প একজন কিশোরের অন্তর্দৃষ্টি জাগ্রত হওয়ার কাহিনী । গল্পের নামকরণের মধ্যে তার ইঙ্গিত মেলে । তপন ভাবতো যারা গল্প কবিতা লেখে তারা আলাদা জগতের মানুষ। তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তার মেসোমশাই কে দেখে। যে কিনা তপনের বাবা কাকার মতই একজন সাধারন মানুষ। তিনি ওদের মতই সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম করেন। ওদের মতই খেতে বসে বলেন "আরে ব্যস, এত কখনো খাওয়া  যায়" ইত্যাদি ।

তপনের লেখা গল্পটির মেসোমশাই নিয়ে যান ছাপিয়ে দেবেন বলে। কিন্তু দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর তপন তার গল্পটা আর ছাপার অক্ষরে দেখতে পায় না এবং সে প্রত্যাশা ছেড়ে দেয়। হঠাৎ একদিন তার মাসি ও মেসো কে তাদের বাড়িতে আসতে দেখে সন্ধ্যাতারা পত্রিকা হাতে। এ পত্রিকায় তপনের গল্প ছাপা হয়েছে কিন্তু সেই গল্প পড়ে চক্ষু চড়কগাছ ।প্রায় পুরো লেখাটাই পাল্টে দিয়েছেন। তখন তপনের মন ভেঙে যায়। আত্মমর্যাদাসম্পন্ন তপন  এবার থেকে সিদ্ধান্ত নে  সে নিজে গল্প লিখে নিজে গল্প সম্পাদকের কাছে দিয়ে আসবে। অপরের আশায় কখনো লেখক হওয়া যায় না। এই ভাবেই তপনের জ্ঞানচক্ষুর আবার উন্মোচন ঘটে।


৭. "জ্ঞানচক্ষু" গল্প অবলম্বনে তপন চরিত্রটির পরিচয় দাও ।

উত্তর : আশাপূর্ণা দেবীর "জ্ঞানচক্ষু" গল্পের মূল চরিত্র তপন। তার চরিত্রের যে বৈশিষ্ট্যগুলি গল্পে দেখতে পাই তা হল –

কল্পনা প্রবণতা : লেখক সম্পর্কে তপনের মনে এক অলৌকিক ধারণা ছিল। সে ভাবত লেখকরা অন্য জগতের বাসিন্দা, আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতন তারা একদমই নয় ।

সৃজনশীলতা:- ছোট মাসির বিয়ের পর তপনের ধারণা সম্পূর্ণ বদলে যায়। কারণ তার মেসোমশাই ছিল একজন লেখক, যার অনেক বই ছাপা আছে। একজন লেখককে খুব কাছ থেকে দেখে লেখক হওয়ার অদম্য বাসনা তপনের মনে আবারও দেখা দেয় এবং সে লিখে ফেলে একটি সম্পূর্ণ গল্প। নতুন মেসোর প্রশংসা করায় লেখক হবার স্বপ্ন আরো জাগ্রত হয়ে ওঠে ।

আবেগপ্রবণতা ও সংবেদনশীলতা : বিখ্যাত পত্রিকা সন্ধ্যাতারায় তপনের গল্প টা ছেপে বেরোলে প্রথমে সে খুশি হলেও পরে তা দেখে সে অবাক হয়ে যায়। এর কারণ মেসোমশাই সংশোধন করতে গিয়ে তার পুরো গল্পটাই পাল্টে দিয়েছেন।  তখন সে গল্পের মধ্যে তার নিজের লেখা গল্পটি খুঁজে পায়না তাই তার মন ভেঙ্গে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে ।

আত্মাভিমান:- মেসোর সংশোধনে তার লেখার আমূল পরিবর্তন কে তপন মেনে নিতে পারে না। তাই সে সংকল্প করে ছাপা হোক বা না হোক এবার থেকে নিজের লেখা নিজে গিয়ে পত্রিকার সম্পাদকের কাছে দিয়ে আসবে। এই  আত্মসম্মানবোধই তপনকে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ করেছে ।

 

PDF will be available soon 

Join Our Telegram Channel for Notifications

 

pothon-pathon-online-telegram-channel

তোমাদের কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা তোমরা এই পোস্টের নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে জানাতে পারো ।

আমাদের লেটেস্ট পোস্টের আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করতে পারো । আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করার জন্য পাশের লিংকটিতে ক্লিক কর: Pothon Pathon Facebook Page

 

আমাদের Telegram Channel এ জয়েন হতে পাশের লিংক এ ক্লিক করন: Pothon Pathon Telegram

এছাড়া অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের মেল করতে পারো | আমাদের মেল আইডি হল: pothonpathononline@gmail.com

 

Tags: Madhyamik Bengali Notes, Madhyamik Bangla Notes PDF Download, WBBSE Class 10 Notes, WBBSE Class 10 Bengali Notes PDF, Sahitya Sanchayan Class 10 guide book PDF, Class 10 Bengali Gyanchokkhu Notes, gyanchakshu class 10 pdf, জ্ঞানচক্ষু   গল্পের  প্রশ্নোত্তর ,মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন গল্প : জ্ঞানচক্ষু 
 
 
 © Pothon Pathon Online

0/Post a Comment/Comments

Please put your valuable comments.

Previous Post Next Post