মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নোত্তর | কবিতা : অসুখী একজন | WBBSE Madhyamik Bengali Notes | Asukhi Ekjon Notes

wbbse-madhyamik-bengali-notes-osukhi-ekjon-poem

 

প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, পঠন পাঠন অনলাইন এর ওয়েবসাইটে তোমাদের স্বাগত জানাই | আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি মাধ্যমিক বাংলার অসুখী একজন কবিতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর নিয়ে । 

WBBSE Madhyamik Bengali Notes Asukhi Ekjon

মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নোত্তর

কবিতা : অসুখী একজন


বহুমুখী উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর (MCQ)

১. অসুখী একজন কবিতাটি মূল কবিতার ভাষান্তর তার কবি হলেন –

(ক) পাবলো পিকাসো

(খ) পাবলো নেরুদা

(গ) গিউসেপ্ন উনগারেত্তি

(ঘ) পেনত্তি সারিকোস্কি

উত্তর : (খ) পাবলো নেরুদা


২. অসুখী একজন কবিতার ইংরেজি তরজমা টি হল –

(ক) The Unhappy Woman

(খ) The Unhappy

(গ) The Unhappy One

(ঘ) The Unhappy Man

উত্তর : (গ) The Unhappy One


৩. অসুখী একজন শীর্ষ অনুবাদ কবিতাটি নবারুণ ভট্টাচার্যের যে কাব্যগ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে –

(ক) বিদেশি ফুলে রক্তের ছিটে

(খ) এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না

(গ) মুখে মেঘের রুমাল বাঁধা

(ঘ) রাতের সার্কাস

উত্তর : (ক) বিদেশি ফুলে রক্তের ছিটে


৪. কবি পাবলো নেরুদার জন্মস্থান –

(ক) চিলি

(খ) ফ্রান্স

(গ) ইটালি 

(ঘ) জার্মানি

উত্তর : (ক) চিলি


৫. কবি পাবলো নেরুদার জীবনকাল –

(ক) ১৯০৪ - ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দ

(খ) ১৯০৫ - ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দ

(গ) ১৯০০ - ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দ

(ঘ) ১৯০৭ - ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দ

উত্তর : (ক) ১৯০৪ - ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দ


৬. পাবলো নেরুদার আসল নাম –

(ক) নেফতালি রেয়েস বাসোয়ালতো

(খ) নেফতালি রিকার্দো পাবলো রেয়েস নেরুদা

(গ) নেফতালি রিকার্দো পাবলো রেয়েস নেরুদা

(ঘ) নেফতালি রিকার্দো পাবলো রেয়েস নেরুদা বাসোয়ালতো

উত্তর : (খ) নেফতালি রিকার্দো পাবলো রেয়েস নেরুদা


৭. পাবলো নেরুদা সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন –

(ক) ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ

(খ) ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দ

(গ) ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দ

(ঘ) ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দ

উত্তর : (ঘ) ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দ


৮. "আমি তাকে ছেড়ে দিলাম"– কথক ছেড়ে দিয়েছিল –

(ক) তাঁর বাড়ি কে

(খ) তাঁর ঘোড়াটিকে

(গ) একজন মেয়েকে 

(ঘ) তাঁর মা কে

উত্তর : (গ) একজন মেয়েকে


৯. নিচের যে কাব্যগ্রন্থটি পাবলো নেরুদার রচিত –

(ক) Intimacies : Poems Of Love

(খ) Extravagaria

(গ) The Captain's Verses

(ঘ) On the Blue Shore of Silence: Poems of the Sea

উত্তর : (খ) Extravagaria


১০. "সে জানতো না"  'অসুখী একজন' কবিতায় "সে" বলতে বোঝানো হয়েছে –

(ক) গির্জার এক নান কে

(খ) একটা কুকুরকে

(গ) একজন সাধারন নারীকে

(ঘ) বাড়ির ভৃত্যকে

উত্তর : ক) গির্জার এক নান কে


১০. কবির পায়ের দাগ কে ধুয়ে দিল?

(ক) মালি

(খ) জল

(গ) শিশু

(ঘ) বৃষ্টি

উত্তর : (ঘ) বৃষ্টি


১১. "অসুখী একজন" কবিতায় মেয়েটি যার অপেক্ষায় অপেক্ষারত –

(ক) কবি

(খ) গির্জার নান

(গ) শিশু

(ঘ) তুমি

উত্তর : (ক) কবি


১২."অসুখী একজন" কবিতায় দেবতাদের চেহারা যেরকম ছিল –

(ক) গোলাপি নীল

(খ) গোলাপি হলুদ

(গ) শান্ত হলুদ

(ঘ) অশান্ত বাদামি

উত্তর : (গ) শান্ত হলুদ


১৩. "বছরগুলো নেমে এলো তার" –

(ক) চলার পথে

(খ) জীবনের ওপরে

(গ) মাথার ওপরে

(ঘ) ঘরের দরজায়

উত্তর : (গ) মাথার ওপরে


১৪. "একটা কুকুর চলে গেল, হেঁটে গেল"–

(ক) একজন অসুখী মেয়ে

(খ) গির্জার এক নান

(গ) শান্ত হলুদ দেবতারা

(ঘ) এক ভবঘুরে

উত্তর : (খ) গির্জার এক নান


১৫. "সে জানতো না"– সে কে ?

(ক) গির্জার এক নান

(খ) একটা কুকুর

(গ) একজন সাধারণ নারীকে

(ঘ) বাড়ির ভৃত্য কে

উত্তর : (গ) একজন সাধারণ নারীকে 

 

অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর :

১. "অসুখী একজন" কবিতাটি কার লেখা ?

উ:- "অসুখী একজন" কবিতাটি চিলির প্রখ্যাত প্রতিবাদী কবি এবং প্রেমের কবিতাতেও এক আশ্চর্য কণ্ঠস্বরের স্রষ্ঠা পাবলো নেরুদার লেখা ।


২. তোমাদের পাঠ্য অসুখী একজন কবিতাটি বাংলা ভাষায় কে তরজমা করেছেন?

উ:- আমাদের পাঠ্য "অসুখী একজন" কবিতাটি বাংলা ভাষায় তরজমা করেছেন কবি নবারুণ ভট্টাচার্য।


৩. "অসুখী একজন" কবিতাটি ইংরেজি তরজমা টির নাম কি?

উ:- "অসুখী একজন" কবিতাটি ইংরেজি তরজমাটির নাম– The Unhappy One.


৪."অসুখী একজন" কবিতাটি কোন অনুবাদ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?

উ:- পাবলো নেরুদার রচিত "অসুখী একজন" কবিতাটি কবি নবারুণ ভট্টাচার্যের অনুবাদ কাব্যগ্রন্থ "বিদেশি ফুলে রক্তের ছিটে" নামক কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।


৫. "অসুখী একজন" কবিতাটি পাবলো নেরুদার কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে?

উ:- অসুখী একজন কবিতাটি চিলির প্রখ্যাত কবি পাবলো নেরুদার "Extravagaria" কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত কবিতা।


৬. কবি পাবলো নেরুদার জীবনকাল নির্দেশ করো ।

উ:- কবি পাবলো নেরুদার প্রকৃত নাম নেফতালি রিকার্দো রেয়েস বাসোয়ালতো।


৭. "ঘাস জন্মালো রাস্তায়"– ব্যঞ্জনাটি কিসের?

উ:- "অসুখী একজন কবিতায় রাস্তায় ঘাস জন্মানোর কথা বলার মধ্য দিয়ে পথে চলাচলের মানুষ যে আর নেই, সেই ব্যঞ্জনা টি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।


৮. "একটা সপ্তাহ আর একটা বছর কেটে গেল"– এই ব্যঞ্জনাটি কবিতায় কিভাবে ফুটে উঠেছে?

উ:- একটা কুকুর বা একটা গির্জার নান এর হেঁটে যাওয়ার তথ্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে একটা সপ্তাহ আর একটা বছর কেটে যাওয়ার ব্যঞ্জনা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।


৯. "নেমে এল তার মাথার উপর"– মাথার ওপর কি নেমে এলো?

উ:- কবি পাবলো নেরুদার রচিত "অসুখী একজন" কবিতায় কথক এর জন্য অপেক্ষারতা নারীর 'মাথার ওপর' একটার পর একটা বছর নেমে আসার কথা বলা হয়েছে।


১০. "অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রেখে দরজায়" কে কাকে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন?

উ:- কবি পাবলো নেরুদা রচিত "অসুখী একজন" কবিতায় কথক তাঁর প্রেমিকাকে অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রেখেছেন।


১১. "তারপর যুদ্ধ এলো"– কিভাবে এলো?

উ:- কবি পাবলো নেরুদার রচিত অসুখী একজন কবিতার রক্তের এক আগ্নেয় পাহাড়ের মত যুদ্ধ এসেছিল।


১২. শিশু আর বাড়িরা খুন হলো"– কিভাবে?

উ:- কবি পাবলো নেরুদার লেখা অসুখী একজন কবিতার ভয়াবহ যুদ্ধে শিশু আর গৃহস্থ মানুষেরা খুন হলো।


১৩. "সেই মেয়েটির মৃত্যু হল না"– কোন মেয়েটির মৃত্যু হল না?

উ:- কবি পাবলো নেরুদার অসুখী একজন কবিতায় কালান্তক যুদ্ধে শিশু ও গৃহস্থের মৃত্যু হলেও কথকের অপেক্ষায় থাকা মেয়েটির মৃত্যু হয়নি।


১৪. "সমস্ত সমতলের ধরে গেল আগুন"– কিভাবে?

উ:- কবি পাবলো নেরুদার অসুখী একজন কবিতায় ভয়াবহ যুদ্ধের কারণে সমস্ত সমতলে আগুন ধরে গেল।


১৫. "শান্ত হলুদ দেবতারা/ যারা হাজার বছর ধরে..."– কি করছিলেন?

উ:- কবি পাবলো নেরুদার রচিত "অসুখী একজন" কবিতায় শান্ত হলুদ দেবতারা হাজার বছর ধরে ধ্যানে ডুবেছিলেন, যেন স্বপ্ন দেখছিলেন।


১৬. "সব চূর্ণ হয়ে গেল"– কিভাবে কি চূর্ণ হয়ে গেল?

উ:- কবিতায় যুদ্ধের প্রচন্ড তাণ্ডবে কথকের ফেলে আসা মিষ্টি বাড়ি, বারান্দা, চিমনি প্রাচীন জল তরঙ্গ সব চূর্ণ গেল।


১৭. "আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায়"– কোন পরিস্থিতিতে মেয়েটি কথকের জন্য অপেক্ষা করছে?

উ:- "অসুখী একজন" কবিতায় মৃত্যুপরিকীর্ণ ধ্বংসস্তূপ আর অবিশ্বাসের মধ্যেও কথকের প্রেমিকা অর্থাৎ সেই মেয়েটি তার জন্য অপেক্ষা করছে।


১৮. "যেখানে ছিল শহর/সেখানে ছড়িয়ে রইল"– সেখানে কি ছড়িয়েছিল?

উ:- যেখানে ছিল শহর, যুদ্ধের পর সেই শহরে ধ্বংসস্তূপের মাঝে ছড়িয়ে ছিল কাঠ-কয়লা, দোমড়ানো লোহা, মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা, রক্তের কালো দাগ।


১৯. "তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারলো না"– কারা কোন স্বপ্ন দেখতে পারলো না?

উ:- "অসুখী একজন" কবিতায় যুদ্ধের বীভৎসতায় ভেঙে পড়া "প্রাণময় দেবতারা" শান্তি, মৈত্রী, অহিংসায় স্বপ্ন আর দেখতে পারলো না।


২০. "বৃষ্টিতে ধুয়ে দিল..."– বৃষ্টি এসে কি ধুয়ে দিল?

উ:- কবি পাবলো নেরুদার "অসুখী একজন" কবিতায় বৃষ্টি এসে পথে পড়ে থাকা কথকের পায়ের দাগ ধুয়ে দিল ।


ব্যাখ্যা ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

১. "আমি তাকে ছেড়ে দিলাম"–এই ছেড়ে দেওয়ার তাৎপর্য কি?

উ:- যুদ্ধক্ষেত্রের আহ্বান কবিকে ঘর ছাড়তে বাধ্য করে। এই সময় গৃহসুখ প্রিয়জনের সঙ্গ সবকিছু অর্থহীন হয়ে যায়। বৃহত্তর জীবনের এই আহবান এর কাছে সাংসারিক বন্ধন নেহাতই তুচ্ছ বলে মনে হয়। কবিকে চলে যেতে হয় দূরে। এই বিচ্ছেদের কথাই এখানে বলা হয়েছে। শুধু তাই নয় তার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটিকে কিছু না জানিয়েই, তাকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখেই; বৃহত্তর জগতের আহবানে তাকে বেরিয়ে আসতে হয়।


২. "বৃষ্টিতে ধুয়ে দিল আমার পায়ের দাগ"– কবি এ কথার মধ্য দিয়ে কি বোঝাতে চেয়েছেন?

উ:- বৃহত্তর ও সমাজ গড়ে তোলার দাবি কখনো কখনো মানুষকে ঘর ছাড়তে বাধ্য করে। বিধ্বংসী ও ভয়ানক বিপ্লবের পথকেই সে তার পথ বলে মনে করে। তার স্মৃতি, চেনা পৃথিবী, প্রিয় মানুষেরা–  সবকিছু কে পিছনে ফেলে সে এগিয়ে যায় চূড়ান্ত সংগ্রামের দিকে। সাংসারিক পৃথিবীতে ক্রমশ ধূসর হয়ে যায় মানুষটির স্মৃতি। প্রশ্ন উল্লেখিত কবি এ কথা বোঝাতে চেয়েছেন।


৩. "নেমে এলো তার মাথার ওপর"– কি নেমে এলো?  এই নেমে আসার তাৎপর্য কি?

উ:- পাবলো নেরুদার "অসুখী একজন" কবিতায় অপেক্ষারত মেয়েটির মাথার ওপর একের পর এক কেটে যাওয়া বছরগুলো পাথরের মত নেমে এলো।

❑❑ কবির কথামতো মেয়েটি দরজায় অপেক্ষা করতে থাকলো দিনের পর দিন বছরের পর বছর অথচ তিনি আর ফিরে এলেন না। প্রিয়জনকে হারিয়ে স্বজন-স্বদেশ অসুখী। তাই অতিক্রান্ত বছরগুলো ক্রমেই ভারী বলে অনুভূত হতে থাকলে মেয়েটির। আর এই অনুভূতি চেতনা তাকে আচ্ছন্ন করেছিল বলে মনে হলো তারা যেন মাথার ওপর নেমে এসেছে।


৪. "একটা কুকুর চলে গেল, হেঁটে গেল গির্জার এক নান" প্রসঙ্গটি উল্লেখের কারণ আলোচনা করো।

উ:- সংগ্রামী মানুষকে যুদ্ধ জয়ের জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে যেতেই হয়  কিন্তু তার জন্য অপেক্ষা করে থাকে তার প্রিয়তমা। বিপ্লবীর কাছে এই অপেক্ষা অর্থহীন। অপেক্ষারত মেয়েটি তাই জানেনা যে বিপ্লবী মানুষটি আর কখনো ফিরে আসবে না। ফলে সময় বয়ে যায়। রাস্তা দিয়ে কুকুর কিংবা গির্জার সন্ন্যাসীর হেঁটে যাওয়া বোঝায় যে জীবন তার স্বাভাবিক গতিতে বয়ে যায়। অপেক্ষা চলতেই থাকে।


৫. "ঘাস জন্মালে রাস্তায়"– উদ্ধৃতিটি কোন তাৎপর্য বহন করে?

উ:- পাবলো নেরুদার অসুখী একজন কবিতায় কথক এর দেশত্যাগের কথা বলতে গিয়ে উদ্ধৃত অংশটি অবতারণা করা হয়েছে।  

❑❑ কবিতার কথক তার প্রিয়জনের সান্নিধ্য ত্যাগ করে পা বাড়িয়েছিলেন ঠিকানাবিহীন বিপ্লবের পথে। সেই পথে যারা যায় তাদের ফিরে আসার কোনো নিশ্চয়তা থাকে না। কবিতার কথক যে পথ ধরে স্বদেশ স্বজন ত্যাগ করেছিলেন সেই পথে আর ফিরে আসেননি। যুদ্ধ তার ফেরার পথকে অবরুদ্ধ করেছিল। তাই তার যাওয়ার পথে ঘাস জন্মেছিল।


বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর :

১. "অসুখী একজন" কবিতার মূল বক্তব্য সংক্ষেপে লেখো । 

উ: পাবলো নেরুদার অসুখী একজন কবিতাটি মূল বিষয়বস্তু হলো যুদ্ধের পটভূমিকায় শাশ্বত ভালোবাসার কথা। একজন বিপ্লবীর শ্রেষ্ট জায়গা হল যুদ্ধক্ষেত্রে। এর জন্য তারা যে কোনো রকমের ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকে। কিন্তু যে প্রিয়জনকে ছেড়ে মুক্তির সন্ধানে যায় তার পক্ষে বিচ্ছেদকে মেনে নেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই চলতে থাকে অনন্ত প্রতীক্ষার প্রহর গোনা বছরের পর বছর চলে যায় উড়ে যায় বিপ্লব এর পায়ের ছাপ কিন্তু অপেক্ষা নিয়ে বেঁচে থাকে তার প্রিয় মানুষটি। যথার্থই যখন যুদ্ধ শুরু হয় তখন ধ্বংসের তাণ্ডবে হতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ে পৃথিবী। হত্যা রক্তাক্ত তারা নিরাশ রায়তা তৈরি হয় পৃথিবী জুড়ে যেন আগুন জ্বলে, মন্দিরের প্রতিমা চূর্ণ বিচূর্ণ  হয়ে যায়। ধ্বংস হয়ে যায় বিপ্লবের ফেলে আসা শৈশবের স্মৃতি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। যেখানে ছিল সবুজ গ্রাম-শহর, সেখানে ছড়িয়ে পড়ে কাঠ-কয়লা, দমড়ানো লোহা, আর মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা রক্তের কালো দাগ স্পষ্ট করে দেয় ধ্বংসলীলা তীব্রতাকে কিন্তু সেই ধ্বংসস্তূপের মধ্যে জেগে থাকে ভালোবাসা। বিপ্লবের জন্য অপেক্ষা করে থাকে তার প্রিয়তমা। কারন ভালোবাসা কখনো মরে না। ভালোবাসা যে মৃত্যুহীন।


২. "তারপর যুদ্ধ এলো"– ' তারপর ' কথাটির তারা কবি কোন সময়ের কথা বলছেন? যুদ্ধের প্রভাব কবি প্রত্যক্ষ করেছিলেন?

উ: অসুখী একজন কবিতায় কবি বিপ্লবের আহবানে ঘর ছেড়েছিলেন। কবির প্রিয়তমা অপেক্ষা করছিলেন যে একদিন ফিরে আসবেন। কিন্তু তার অপেক্ষার প্রহর শেষ হতো না। বৃষ্টির জলে ধুয়ে গিয়েছিল কবির পায়ের ছাপ। রাস্তা ঢেকে গিয়েছিলো ঘাসে। বছরের-পর-বছর এভাবে কেটে যাওয়ার পরে একসময় যুদ্ধ শুরু হয়। "তারপর" কথাটির দ্বারা এই সময়কেই বোঝানো হয়েছে। 


❑❑  সময় পেরিয়ে যখন মুক্তির জন্য যুদ্ধ শুরু হয় সে যুদ্ধ আসে রক্তের এক আগ্নেয় পাহাড়ের মত। শিশুরাও সে যুদ্ধের হাত থেকে রেহাই পায়না। মানুষের বসতি ধ্বংস হয়ে যায়, আগুন লেগে যায় সমতলে। যেসব দেবতারা মন্দিরের ধ্যানে মগ্ন ছিল হাজার বছর ধরে তারাও ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। বিশ্বাস এবং ধ্বংসের ফাটল একসঙ্গে ঘটে। যে সৌন্দর বাড়িতে একদা কবি থাকতেন, বারান্দায় সেই ঝুলন্ত বিছানায় তিনি ঘুমোতেন এবং তার পুরনো স্মৃতি সব একেবারে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায় যুদ্ধের তাণ্ডবে। শহর রূপান্তরিত হয় একটি ধ্বংসস্তূপে। কাঠ-কয়লা, দোমড়ানো লোহা মৃত পাথরের মূর্তির মাথা যেন ধ্বংসের প্রতীক হয়ে যায় আর রক্তের কালো দাগ হলো সেই ধ্বংসস্তূপের প্রমাণ এই ভাবেই যুদ্ধ আসে তার সর্বগ্রাসী বীভৎসতার ভূমিকা নিয়ে। 


৩. "অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রেখে দরজায়/ আমি চলে গেলাম দূর...দূরে।"– চলে যাওয়ার পরে কি কি ঘটেছিল?

উ: পাবলো নেরুদার অসুখী একজন কবিতায় কবিতায় প্রিয়তমাকে দর্শন অপেক্ষা করিয়ে নিজের লক্ষ্যে চলে যান। মেয়েটা জানতো না যে কর্তব্যের সুকঠিন পথ পেরিয়ে তার পক্ষে ফিরে আসা সম্ভব ছিল না। অপেক্ষার সময় এগিয়ে চলে, রাস্তার কুকুরের পাশাপাশি হেঁটে যায় গির্জার নান। সপ্তাহ মাস বছর কেটে যায়। বৃষ্টিতে ধুয়ে যায় পথ দিয়ে চলা মানুষের পায়ের ছাপ। চলার রাস্তা ঢেকে যায় ঘাসে। তারপর একদিন যুদ্ধ আসে আগ্নেয় পাহাড়ের মতো। শিশু হত্যা ঘটে, ধ্বংস হয়ে যায় বাড়িঘর। ভেঙ্গে যায় মন্দিরের দেবতারা। ধ্বংসের এই উন্মত্ততায় বিপ্লবী স্মৃতির স্মারক গুলো চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। সুন্দর বাড়ি, বারান্দা, প্রিয় গোলাপ গাছ, 'ছড়ানো করতলের মতো পাতা চিমনি', সবকিছুই চূর্ণ হয়ে যায়। শহর পুড়ে ছড়িয়ে থাকে কাঠ কয়লা, দুমড়ানো লোহা। রক্তের কালো দাগ যেনো  পড়ে থাকা ধ্বংসস্তূপের স্মৃতিচিহ্ন। এই ধ্বংস আর রক্তাক্ততার মধ্যে বিপ্লবের প্রিয়তমা মেয়েটি অপেক্ষা করে একই রকম ভাবে জেগে থাকে।


৪. " সব চূর্ণ হয়ে গেল, জ্বলে গেল আগুনে"– "অসুখী একজন" কবিতা অবলম্বনে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো। 

উ: পাবলো নেরুদার Extravagaria গ্রন্থ থেকে নেওয়া একটি কবিতা "অসুখী একজন" নামে অনুবাদ করেছেন নবারুণ ভট্টাচার্য। সেই কবিতায় যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে চিরজীবী ভালোবাসার কথা বলা হয়েছে। যুদ্ধ কবির কাছে "রক্তের এক আগ্নেয় পাহাড়ের মতো"। শিশুখুন, বসতি ধ্বংস যুদ্ধের মর্মান্তিক রূপ কে স্পষ্ট করে। মারণ যুদ্ধের ছোঁয়ায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় পৃথিবী। এমনকি মন্দিরের দেবতারা পর্যন্ত ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। যুদ্ধে নির্বিকার ধ্বংসের লুপ্ত হয়ে যায় কবির স্মৃতি। তার ফেলে আসা সুন্দর বাড়ি, সেই বারান্দা যেখানে তিনি ঝুলন্ত বিছানায় ঘুমাতেন, গোলাপি গাছ সবকিছুই চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যায়। যুদ্ধ শুধু আর্থিক ক্ষতি বা জীবনহানি নয়, যুদ্ধ ডেকে আনে মানবিক বিপর্যয়ও। মানুষের স্মৃতি সঞ্চয়কে শূন্য করে দেয়।  যে সব জিনিসকে আশ্রয় করে অনুভূতির বিস্তার ঘটে সেগুলি যুদ্ধের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত হয়। ঘরছাড়া একজন বিপ্লবীর মধ্যেও পুরানো দিনের ফেলে আসা আবেগ কাজ করে। তা এই গোপন দীর্ঘশ্বাসের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যায় ।

 

PDF will be available soon 

Join Our Telegram Channel for Notifications

 

pothon-pathon-online-telegram-channel

তোমাদের কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা তোমরা এই পোস্টের নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে জানাতে পারো ।

আমাদের লেটেস্ট পোস্টের আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করতে পারো । আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করার জন্য পাশের লিংকটিতে ক্লিক কর: Pothon Pathon Facebook Page

 

আমাদের Telegram Channel এ জয়েন হতে পাশের লিংক এ ক্লিক করন: Pothon Pathon Telegram

এছাড়া অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের মেল করতে পারো | আমাদের মেল আইডি হল: pothonpathononline@gmail.com

 

Tags: Madhyamik Bengali Notes, Madhyamik Bangla Notes PDF Download, WBBSE Class 10 Notes, WBBSE Class 10 Bengali Notes PDF, Sahitya Sanchayan Class 10 guide book PDF, Class 10 Bengali Asukhi Ekjon Notes, osukhi ekjon bengali class 10 pdf, অসুখী একজন কবিতার প্রশ্নোত্তর , অসুখী একজন কবিতার প্রশ্ন উত্তর 2022, অসুখী একজন কবিতায় দেবতাদের চেহারা কেমন ছিল, অসুখী একজন কবিতায় কবি দেবতাদের চেহারা কি বর্ণনা দিয়েছেন, অসুখী একজন কবিতায় কার মাথার উপর বছরগুলি কেন পর পর পাথরের মতো নেমে এসেছিল,
 
 
 © Pothon Pathon Online

0/Post a Comment/Comments

Please put your valuable comments.

Previous Post Next Post