মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নোত্তর | কবিতা : অভিষেক | WBBSE Madhyamik Bengali Notes | Class 10 Bengali Abhishek Question Answer

wbbse-class10-bengali-abhishek-questions-answer-notes-pdf-download
 

প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, পঠন পাঠন অনলাইন এর ওয়েবসাইটে তোমাদের স্বাগত জানাই | আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি মাধ্যমিক বাংলার অভিষেক কবিতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর নিয়ে । 

WBBSE Madhyamik Bengali Notes Abhishek

মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নোত্তর

কবিতা : অভিষেক

বহুমুখী উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর (MCQ)

১. "অভিষেক" কবিতাটি কবি মধুসূদন দত্তের যে কাব্য থেকে নেওয়া তা হ'ল–

ক. মেঘনাদবধ কাব্য

খ. বীরাঙ্গনা কাব্য

গ. ব্রজাঙ্গনা কাব্য

ঘ. চতুর্দশপদী কবিতাবলী

উত্তর : ক. মেঘনাদবধ কাব্য

 

২. "কনক-আসন ত্যজি, বীরেন্দ্রকেশরী" বীরেন্দ্রকেশরী কাকে বলা হয়েছে?–

ক. রাবণ কে

খ. রাঘব কে

গ. ইন্দ্রজিৎ কে

ঘ. কুম্ভকর্ণ কে

উত্তর : গ. ইন্দ্রজিৎ কে

 

৩. "প্রণমিয়া, ধাত্রীর চরণে"– এই ধাত্রী হলেন–

ক. প্রভাষা

খ. কঙ্কাবতী

গ. সরমা

ঘ. অম্বুরাশিসুতা

উত্তর : ক. প্রভাষা

 

৪. "রত্নাকর রত্নোত্তমা" কে?–

ক. সরমা

খ. সীতা

গ. প্রমীলা

ঘ. লক্ষ্মী

উত্তর : ঘ. লক্ষ্মী

 

৫. "রোষে মহাবলী/ মেঘনাদ"– রোষে মেঘনাদ কি ছিঁড়ে ফেললো? 

ক. হস্তবর্ম

খ. কর্ণকুণ্ডল

গ. কুসুমরাজি

ঘ. কুসুমদাম

উত্তর : ঘ. কুসুমদাম

 

৬. "হেথা আমি বামাদল মাঝে?"– "বামা" শব্দের অর্থ–

ক. বান্ধবী

খ. নারী

গ. রাক্ষসী

ঘ. দেবী

উত্তর : খ. নারী

 

৭. "সাজিলা রথীন্দ্রষভ"– রথীন্দ্রষভ শব্দের অর্থ–

ক. শ্রেষ্ঠ রাজা

খ. শ্রেষ্ট দেবতা

গ. শ্রেষ্ঠ রথী

ঘ. শ্রেষ্ঠ অসুর

উত্তর : গ. শ্রেষ্ঠ রথী

 

৮. "হৈমবতীসুত" যাকে বধ করেছিলেন তিনি হলেন–

ক. মহিষাসুর

খ. তরকাসুর

গ. বৃত্রাসুর

ঘ. ভস্মাসর

উত্তর : খ. তরকাসুর

 

৯. ইন্দ্রজিতের স্ত্রীর নাম–

ক. ইন্দিরা

খ. সরমা

গ. নিকষা

ঘ. প্রমীলা

উত্তর : ঘ. প্রমীলা

 

১০. "নমি পুত্র পিতার চরণে"– এখানে পুত্র হল–

ক. মেঘনাদ

খ. বীরবাহু

গ. কুম্ভকর্ণ

ঘ. বিভীষণ

উত্তর : ক. মেঘনাদ


১১. "উদ্ধারিতে গোধন , সাজিলা শূর শমীবৃক্ষমূলে । ” কে সেজেছিলেন ? 

ক. মেঘনাদ 

খ. বীরবাহু 

গ.  বিরাটপুত্র 

ঘ. অর্জুন

উত্তর : ঘ. অর্জুন

 

১২. “ উড়িছে কৌশিক ধ্বজ ” — ‘ কৌশিক ধ্বজ ‘ কথাটির অর্থ হলো— 

ক. সাদা রঙ্গের পতাকা 

খ.  কালো রঙের পতাকা

গ. রেশমি কাপড়ের পতাকা 

ঘ. কুশ নামাঙ্কিত পতাকা

উত্তর : গ. রেশমি কাপড়ের পতাকা


১৩.“ হাসিবে মেঘবাহন ” –মেঘবাহন কে ? 

 ক. ব্রহ্মা 

খ. বিয়ু 

গ. মহেশ্বর 

ঘ. ইন্দ্র

উত্তর : ঘ. ইন্দ্র


১৪. “ তায় আমি জাগানু অকালে ভয়ে ” –কাকে জাগানোর কথা বলা হয়েছে ? 

 ক. ইন্দ্ৰজিৎ 

খ. বীরবাহুকে  

গ. রাবণকে  

ঘ. কুম্ভকর্ণকে 

উত্তর : ক. ইন্দ্ৰজিৎ

 

১৫. “ কনক – আসন ত্যজি , বীরেন্দ্রকেশরী ” – ‘ বীরেন্দ্রকেশরী ’ কাকে বলা হয়েছে ? 

 ক. ইন্দ্রজিৎ 

খ.  রাবণ 

গ. বিভীষণ 

ঘ. কুম্ভকর্ণ 

উত্তর : ক. ইন্দ্রজিৎ


১৬.অভিষেক’ শীর্ষক কাব্যাংশটি ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর –

ক. প্রথম সর্গের অন্তর্গত

খ. দ্বিতীয় সর্গের অন্তর্গত 

গ. তৃতীয় সর্গের অন্তর্গত 

ঘ. ষষ্ঠ সর্গের অন্তর্গত

উত্তর : ক. প্রথম সর্গের অন্তর্গত


১৭. ‘অভিষেক’ শীর্ষক কাব্যাংশটি ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর যে সর্গ থেকে গৃহীত, তার নাম – 

ক. অভিষেক 

খ. বধ

গ. সমাগম 

ঘ. প্রেতপুরী

উত্তর : ক. অভিষেক


১৮. “কনক-আসন ত্যজি, বীরেন্দ্রকেশরী…”-বীরেন্দ্রকেশরী’ হলেন—

ক. রাবণ 

খ. বিভীষণ 

গ. ইন্দ্রজিৎ 

ঘ. কুম্ভকর্ণ

উত্তর : (গ) ইন্দ্রজিৎ


১৯. “কনক-আসন ত্যজি, বীরেন্দ্রকেশরী ইন্দ্রজিৎ, প্রণমিয়া…” ইন্দ্রজিৎ কাকে প্রণাম করেছিল? 

ক. রাবণ 

খ. চিত্রাঙ্গদা 

গ. মন্দোদরী  

ঘ. ধাত্রী

উত্তর : ঘ. ধাত্রী


২০.“কি হেতু, মাতঃ, গতি তব আজি/এ ভবনে…?”—ইন্দ্রজিৎ এ কথা জিজ্ঞাসা করেছেন – 

ক. মন্দোদরী দেবীকে  

খ. প্রমীলাকে 

গ. সীতাদেবীকে 

ঘ. প্রভাষাবেশী লক্ষ্মীকে

উত্তর : ঘ. প্রভাষাবেশী লক্ষ্মীকে


২১. “কি হেতু, মাতঃ, গতি তব আজি/এ ভবনে? কহ দাসে..”—ইন্দ্রজিৎ ধাত্রীর কাছে কী জানতে চেয়েছিলেন? –

ক. বীরবাহুর কথা 

খ. রাবণের নির্দেশ 

গ. লঙ্কার কুশলসংবাদ 

ঘ. প্রমীলার কুশলসংবাদ

উত্তর : গ. লঙ্কার কুশলসংবাদ


২২. “ছদ্মবেশী অম্বুরাশি সুতা/উত্তরিলা”—‘অম্বরাশি সুতা’ যাঁর সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি হলেন— 

ক. মায়াদেবী 

খ. চিত্রাঙ্গদা 

গ. লক্ষ্মী 

ঘ. সীতা

উত্তর : গ. লক্ষ্মী


২৩. “কহ দাসে…”—ইন্দ্রজিৎ জানতে চেয়েছেন—

 ক. রাবণের চিন্তার কারণ 

খ. বিভীষণের অবস্থান 

গ. রাবণের শারীরিক অবস্থা  

ঘ. লঙ্কাপুরীর কুশলবার্তা

উত্তর : ঘ. লঙ্কাপুরীর কুশলবার্তা


২৪. “হায়! পুত্ৰ, কি আর কহিব।কনক-লঙ্কার দশা!” বক্তা লঙ্কার কথা বলার ক্ষেত্রে হতাশা প্রকাশ করেছেন, কারণ— 

ক. ঘোরতর যুদ্ধে কুম্ভকর্ণের মৃত্যু হয়েছে 

খ.  ঘোরতর যুদ্ধে বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে 

গ.  ঘোরতর যুদ্ধে রাবণরাজার মৃত্যু হয়েছে 

ঘ. ঘোরতর যুদ্ধে সারণের মৃত্যু হয়েছে

উত্তর : খ. ঘোরতর যুদ্ধে বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে


২৫. “ঘোরতর রণে, হত প্রিয় ভাই তব…”এই ‘প্রিয় ভাই’ হল— 

ক.  বীরবাহু 

খ. লক্ষ্মণ 

গ.  কুম্ভকর্ণ 

ঘ.  নিশুম্ভ

উত্তর : ক. বীরবাহু


অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর :

১. ‘মেঘনাদবধ’ কাব্যের প্রথম সর্গের নাম কী?

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্যের প্রথম সর্গের নাম ‘অভিষেক’।


২. “প্রণমিয়া ধাত্রীর চরণে,/কহিলা”—ইন্দ্রজিৎ কী বলেছিল?

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে ইন্দ্রজিৎ লঙ্কার কুশল জিজ্ঞাসা করেছিল এবং সেখানে ধাত্রীর আসার কারণ জিজ্ঞাসা করেছিল।


৩. “ছদ্মবেশী অম্বুরাশি-সুতা উত্তরিলা।” “অম্বুরাশি-সুতা’-কে এবং কেন তার এমন নাম?

উত্তর : ‘অম্বুরাশি’ শব্দের অর্থ জলসমূহ, ‘সুতা’ শব্দের অর্থ কন্যা। সমুদ্রমন্থনের সময় লক্ষ্মীর উত্থান হয়েছিল বলে তাকে ‘অম্বুরাশি-সুতা’ বলা হয়েছে।


৪. “ছদ্মবেশী অম্বুরাশি সুতা”—অম্বুরাশি-সুতা কার ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন?

উত্তর : উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। অম্বুরাশি-সুতা বা লক্ষ্মী ইন্দ্রজিতের ধাত্রীমাতা প্রভাষার ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন।


৫. “সসৈন্যে সাজেন আজি যুঝিতে আপনি।”-কে সসৈন্যে সাজেন?

উত্তর : উদ্ধৃত পঙকিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত প্রিয় পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুতে লঙ্কেশ্বর রাবণ সৈন্যদলসহ যুদ্ধসাজে সজ্জিত হন।


৬. “জিজ্ঞাসিলা মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া;”—এই বিস্ময়ের কারণ কী ছিল?

উত্তর : রামচন্দ্রকে খন্ড খন্ড করে কেটে ফেলার পরে কে বীরবাহুকে হত্যা করল তা ভেবেই ইন্দ্রজিৎ বিস্মিত হয়েছেন ?


৭. ছদ্মবেশী লক্ষ্মী কোন সংবাদ নিয়ে এসেছিলেন?

উত্তর : ছদ্মবেশী লক্ষ্মী রাবণপুত্র বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ এবং তাতে রাবণের শোকাকুলতার সংবাদ নিয়ে এসেছিলেন।


৮. “এ অদ্ভুত বারতা”—কোন বারতার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর : উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। এখানে বীরচূড়ামণি বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদের কথাই বলা হয়েছে।


৯. “শীঘ্ৰ কহ দাসে” শীঘ্র কী বলতে বলা হয়েছে?

উত্তর : ছদ্মবেশী লক্ষ্মী বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ দিতে এসেছেন মেঘনাদকে লক্ষ্মী কোথায় সেই মৃত্যুসংবাদ পেলেন তা শীঘ্ন বলতে বলা হয়েছে।


১০. “রত্নাকর রত্নোত্তমা ইন্দিরা সুন্দরী উত্তরিলা”—‘ইন্দিরা সুন্দরী কে?

উত্তর : উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। লক্ষ্মীর অপর নাম ইন্দিরা। তাই এখানে। লক্ষ্মীকেই ইন্দিরা সুন্দরী বলা হয়েছে।


১১. “যাও তুমি ত্বরা করি:”—এই শীঘ্র যাওয়ার প্রয়োজন কী?

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশটিতে রাক্ষসকুলের মান রক্ষা করার জন্যই মেঘনাদের শীঘ্ন যাওয়ার প্রয়োজন বলে লক্ষ্মী মন্তব্য করেছেন।


১২. “…রোষে মহাবলী/মেঘনাদ”—মেঘনাদ রুষ্ট হয়ে কী করেছিলেন?

উত্তর : মেঘনাদ রুষ্ট হয়ে ফুলরাশি ছিড়ে ফেলেছিল, সোনার বালা দূরে ফেলে দিয়েছিল।


১৩. “পদতলে পড়ি, শোভিল কুণ্ডল।” ‘কুণ্ডল’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর : উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীতাকুণ্ডল’ শব্দের অর্থ কর্ণভূষণ অর্থাৎ কানের অলংকার।


১৪. “হা ধিক মোরে!”—ইন্দ্রজিৎ কেন নিজেকে ধিক্কার দিয়েছিলো?

উত্তর : শত্রুসৈন্য যখন লঙ্কাকে ঘিরে ফেলেছে তখন তিনি প্রসোদকাননে সময় কাটাচ্ছেন—এই ভেবেই ইন্দ্রজিৎ নিজেকে ধিক্কার দিয়েছিল।


১৫. “বৈরিদল বেড়ে স্বর্ণলঙ্কা”—কাদের বৈরিদ বলা হয়েছে?

উত্তর : উদ্ধৃত পর্ভূক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত এখানে রামচন্দ্র ও তার সৈন্যবাহিনীকে বৈরিল বলা হয়েছে।


১৬. “হেথা আমি বামাদল মাঝে?”—কখন ইন্দ্রজিৎ একথা বলেছেন?

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে ইন্দ্রজিৎ একথা বলেছেন যখন রাঘব সৈন্যরা চারপাশ থেকে লঙ্কাপুরীকে ঘিরে ফেলেছে


১৭. “হেথা আমি বামিদলমাঝে।” – ‘হেথা’ বলতে কোন স্থানের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর : উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত৷ ‘হেথা’ বলতে এখানে কনকলঙ্কার প্রমোদ উদ্যানকেই বোঝানো হয়েছে।


১৮. “এই কি সাজে আমারে”—কী সাজে না বলে বক্তার মনে হয়েছে?

উত্তর : রামচন্দ্রের সৈন্যবাহিনী কনকলঙ্কাকে ঘিরে ফেলেছে; এই সময় ইন্দ্রজিতের প্রমোদকাননে বিচরণ করা সাজে না।


১৯. “হৈমবতীসত যথা…” কীসের কথা এখানে বলা হয়েছে?

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে দেবসেনাপতি কার্তিকের তারকা বধের কথা এখানে বলা হয়েছে।


২০. “কিম্বা যথা বৃহন্নলারুপী কিরীটী”—‘বৃহন্নলারুপী কিরীটী’ কাকে বলা হয়েছে?

উত্তর : উদ্ভূত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। মহাভারতের অর্জুন চরিত্রটি হলেন বৃহন্নলারূপী কিরীটী।


২১. ‘ছদ্দবেশী অম্বুরাশি-সুতা’- ‘অম্বুরাশি-সুতা’ কার ছদ্মবেশ ধারণ করেছিল?

উত্তর : ‘অম্বুরাশি-সুতা’ অর্থাৎ দেবী লক্ষী মেঘনাদের ধাত্রী প্রভাষা রাক্ষসীর ছদ্মবেশ ধারণ করেছিল।


২২. ‘কহ দাসে লঙ্কার কুশল।’- উদ্দিষ্ট ব্যক্তি বক্তাকে লঙ্কার কোন খবর দিয়েছিলেন?

উত্তর : উদ্দিষ্ট ব্যক্তি অর্থাৎ ছদ্দবেশী লক্ষীদেবী বক্তা মেঘনাদকে লঙ্কার যে খবর দিয়েছিলেন তা হল, ঘোরতর যুদ্ধে বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে।


২৩. ‘এ অদ্ভুত বারতা, জননী/কোথায় পাইলে তুমি,’ – কোন্ অদ্ভুত বার্তার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর : অদ্ভুত বার্তাটি হল, ঘোরতর যুদ্ধে মেঘনাদের প্রিয় ভাই বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে।


২৪. ‘হা ধিক্ মােরে’ – বক্তা নিজেকে ধিক্কার জানিয়েছে কেন?

উত্তর : বক্তা অর্থাৎ মেঘনাদ নিজেকে ধিক্কার জানিয়েছে কারণ শত্রুর দল তার জন্মভূমি অর্থাৎ লঙ্কা ঘিরে ফেলেছে, অথচ সে তখন ‘বামাদল মাঝে’ আমোদ-প্রমোদে ব্যস্ত।


২৫. ‘এই কি সাজে আমারে’ – তাকে কী সাজে না?

উত্তর : উদ্ধৃতাংশের বক্তা মেঘনাদের মতে, স্বদেশ যখন বিপন্ন তখন নারীসান্নিধ্যে অবসর যাপন করা তাকে সাজে না।


ব্যাখ্যা ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

১. "ঘুচাব ও অপবাদ"-কোন অপবাদ বক্তা কীভাবে ঘোচাবেন?

উত্তর : ‘অভিষেক' কাব্যাংশ তথা ‘মেঘনাদ বধ' কাব্যের প্রধান চরিত্র ইন্দ্রজিতের কণ্ঠে এই বীরােচিত প্রতিজ্ঞাবাক্য ঘােষিত হয়েছে। ভ্রাতাবীরবাহু মায়াবী যােদ্ধা রামচন্দ্রের হাতে নিহত হওয়ায় শােকার্ত লঙ্কেশ্বর যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, লঙ্কা শত্রু পরিবেষ্টিত, এই অবস্থায় লঙ্কার ত্রিলােকজয়ী বীরপুত্র ইন্দ্রজিৎ প্রমােদ-উদ্যানে বামাদের সঙ্গে আমােদ-প্রমােদে মত্ত, এটা বড়াে লজ্জার ব্যাপার। বীরের পক্ষে এটা একটা বিরাট অপবাদ। বীরশ্রেষ্ঠ ইন্দ্রজিৎ নিজেকে ধিক্কার জানিয়ে এই অপবাদ ঘােচানাের উপায় হিসেবে যুদ্ধযাত্রার উদ্যোগ নিয়েছেন। শত্রুকুলকে নিধন করে তিনি ঘােচাবেন তার অপবাদ। 

 

২. "জিজ্ঞাসিলা মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া"- কাকে মহাবাহু বলা হয়েছে ? তার বিস্ময়ের কারণ কী?

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ থেকে উদ্ধৃত এই অংশে উল্লিখিত মহাবাহু হলেন লঙ্কার অলঙ্কার বীর ইন্দ্রজিৎ ।

ইন্দ্রজিৎ সীতাপতি রামচন্দ্রকে নিশারণে পরাস্ত এবং নিহত করেছেন। শর নিক্ষেপ করে খণ্ড খণ্ড করে কেটেছেন শত্রুদের। যুদ্ধজয়ের আনন্দে প্রমােদ-উদ্যানে বামাদের সঙ্গে তিনি যখন আমােদ-প্রমােদে মত্ত তখন ধাত্রী-মা প্রভাষার ছদ্মবেশী রমার মুখে শুনতে পান বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ। সীতাপতি রামচন্দ্র তাকে হত্যা করেছেন। তিনি লঙ্কার দশাও করুণ করে তুলেছেন। যে সীতাপতিকে ইন্দ্রজিৎ স্বয়ং হত্যা করেছেন, তার পক্ষে বেঁচে ওঠা এবং বীরবাহুকে হত্যা করা কীভাবে সম্ভব! এই কথা ভেবে তিনি বিস্মিত।

 

৩. ‘হায়, বিধি বাম মম প্রতি’-বক্তা কে? তিনি এমনকথা বলেছেন কেন?

উত্তর : ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ থেকে উদ্ধৃত এই অংশটির বক্তা হলেন লঙ্কেশ্বর রাবণ।

ভ্রাতা বীরবাহুর মৃত্যুতে ব্যথিত, ক্রুদ্ধ ইন্দ্রজিৎ সীতাপতি রামচন্দ্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাওয়ার অনুমতি চাইলে পুত্রস্নেহকাতর রাবণ বিচলিত হয়ে পড়েন। লঙ্কায় যা ঘটে যাচ্ছে তা শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়, অবিশ্বাস্য। শিলা জলে ভাসছে, মৃত ব্যক্তি জীবিত হয়ে যুদ্ধ করছে। মৃত্যু হচ্ছে বলশালী মহাবীরদের। কুম্ভকর্ণ নিহত। নিহত বীর পুত্র বীরবাহু। এই অবস্থায় ইন্দ্রজিতের যুদ্ধে যাওয়া যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। লঙ্কেশ্বরের প্রাণাধিক প্রিয়পুত্র ইন্দ্রজিৎ লঙ্কার একমাত্র ভরসা। তাকে যুদ্ধে পাঠাতে বক্তার ভয় করে; তাই তিনি এই উক্তি করেন।

 

৪. রক্ষ রক্ষঃকুল-/মান, এ কালসমরে রক্ষঃচূড়ামণি!'- কাকে রক্ষচুড়ামণি বলা হয়েছে? বক্তা কালসমর বলতে কী বুঝিয়েছেন?

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ থেকে উদ্ধৃত এই অংশে রক্ষচূড়ামণি বলে সম্বােধন করা হয়েছে লঙ্কার বীর যােদ্বা ইন্দ্রজিৎকে।

'কালসমর' কথাটি বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায় কাল রূপ সমর কিংবা কাল ঘনিয়ে তােলে যে সমর। কাল' কথাটির অর্থ হলাে মৃত্যু, ব্যাপকার্থে ধ্বংস। রামচন্দ্রের সঙ্গে লঙ্কেশ্বরের যে যুদ্ধ বেধেছিল তা লঙ্কার কাল ঘনিয়ে এনেছিল। যুদ্ধে লঙ্কার বীর সন্তানদের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে বীরবাহুর, কুম্ভকর্ণের। ধ্বংসযজ্ঞ চলছে নিরন্তর। মায়াবী যােদ্ধা রামচন্দ্রের সঙ্গে যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি বােঝা যাচ্ছে না। তবে ঘটে যাচ্ছে লকার ভাগ্য বিপর্যয়। এখন শেষ মহারথী লঙ্কেশ্বর যুদ্ধে যেতে উদ্যত ।

 

৫.‘হাসিবে মেঘবাহন;'-কার উক্তি? মেঘবাহন কেন হাসবে?

উত্তর : উক্তিটি ইন্দ্রজিতের ।

যুদ্ধে ইন্দ্রকে জয় করেছিলেন বলেই তিনি ইন্দ্রজিৎ। সেই ইন্দ্রজিৎবর্তমানে তার পিতা দুর্ধর্ষরণে যাবেন, আর ইন্দ্রজিৎবামাদল মাঝে বিলাস করবেন, এটা একান্ত অনুচিত। এতে ইন্দ্রজিতেরই আত্ম-অপমান। ইন্দ্রজিতের কাছে পরাজিত ইন্দ্র যখন এই সংবাদ শুনবেন, এই দৃশ্য দেখবেন, তখন ইন্দ্রজিতের ভীরুতার কথা ভেবে খুব হাসবেন। সেটাও কি সইবার ? মেঘের মধ্যে থেকে যুদ্ধ করতেন বলে ইন্দ্র মেঘবাহন, আর ইন্দ্রজিৎ মেঘনাদ।


৬. “জিজ্ঞাসিলা মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া”- কাকে ‘মহাবাহু’ বলা হয়েছে? তার বিস্ময়ের কারণ কী? ১+২

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে রাবণপুত্র মেঘনাদকে ‘মহাবাহু’ বলা হয়েছে ।

ধাত্রী প্রভাষার ছদ্মবেশে লক্ষীদেবী আসেন মেঘনাদের কাছে। তাঁর কাছে মেঘনাদ লঙ্কার সংবাদ জানতে চাইলে তিনি বলেন যে রামের সঙ্গে যুদ্ধ করে তার প্রিয় ভাই বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে। এই খবর শুনেই মেঘনাদ বিস্মিত হয়েছিল। তার বিস্ময়ের কারণ এটাই যে যার সঙ্গে যুদ্ধ করে বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে সেই রামচন্দ্রকে মেঘনাদ নিজের হাতে সংহার করেছিল ।


৭. “হায়, বিধি বাম মম প্রতি।” – কার উক্তি? এমন উক্তির কারণ কী? ১+২

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে রাক্ষসরাজ রাবণ একথা বলেছিলেন।

‘বিধি বাম’ বলতে বোঝায় বিধাতা অসন্তুষ্ট হওয়া। আসলে, রাক্ষসাধিপতি রাবণ তার প্রধানতম শত্রু রাম-লক্ষণের কাছে ক্রমশ পরাভূত হচ্ছিলেন। অথচ, শত্রুদল তার বা মেঘনাদের বীরত্বের তুলনায় একেবারেই নগণ্য ছিল। মেঘনাদ ইতিপূর্বে রামকে সংহার করেছিল। কিন্তু দৈবকৃপায় তারা পুনরায় জীবিত হয়ে বীরবাহু এবং কুম্ভকর্ণকে বধ করেছিল। এইজন্য রাবণ বলেছেন যে বিধাতা তার প্রতি অসন্তুষ্ট।

 

৮.“করজোড়ে কহিলা”- উদ্দিষ্ট ব্যক্তি করজোড় করে কী বলেছিল? ৩

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে মেঘনাদ হাতজোড় করে তার পিতা রাক্ষসরাজ রাবণকে বলেছিল যে সে শুনেছে রাম নাকি মরে আবার বেঁচে উঠেছে। সে বলেছিল যে এই মায়া সে বুঝতে পারেনি কিন্তু তাকে যদি অনুমতি দেওয়া হয় তবে রামকে সমূলে নির্মূল করবে।

কীভাবে শত্রুনিধন করা হবে সেকথাও রাবণকে বলেছিল মেঘনাদ। অগ্নিবাণ নিক্ষেপ করে রামকে ভস্ম করে বায়ুবাণ দিয়ে সেই ভস্ম উড়িয়ে দিতে চেয়েছিল সে। অথবা, জীবিত অবস্থায় তাকে বেঁধে এনে ফেলত রাক্ষসরাজের চরণে।  


৯. “ অম্বুরাশি – সুতা উত্তরিলা ” — ‘ অম্বুরাশি – সুতা ’ কী উত্তর দিলেন ? অথবা , ‘ অম্বুরাশি – সুতা ’ কে ? তিনি কেন ইন্দ্রজিতের কাছে এসেছিলেন ? 

উত্তর : প্রশ্নোধৃত অংশে অম্বুরাশি – সুতা হলেন সমুদ্রমন্থনের সময় ক্ষীরোদসাগরের তলদেশ থেকে উঠে আসা দেবী লক্ষ্মী ।

‘অভিষেক ’ কবিতায় ইন্দ্রজিৎ তাঁর আলয়ে মাতাকে আসতে দেখে প্রণাম করে লঙ্কার কুশল জানতে চাইলেন । পুত্রের প্রশ্নের উত্তরে মাতা গভীর দুঃখে বললেন , স্বর্ণলঙ্কার অবস্থা অত্যন্ত বেদনাদায়ক । রামের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে ইন্দ্রজিতের কনিষ্ঠ ভ্রাতা মহাবীর বীরবাহু নিহত হয়েছেন । সে কারণে পুত্রের হত্যার প্রতিশোধ নিতে রাঘবের মোকাবিলা করার জন্য রাক্ষসাধিপতি রাবণ সসৈন্যে সজ্জিত হয়েছেন । 

 

১০. "নাদিলা কর্বুরদল হেরি বীরবরে / মহাগর্ভে।" 'কর্বুরদল' শব্দের অর্থ কী? তাদের এমন আচরণের কারণ কী ? 

উত্তর : কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত লিখিত অভিষেক কবিতায় কর্বুরদল শব্দের অর্থ ‘ রাক্ষসদল।

রাঘবসৈন্য লঙ্কা আক্রমণের ফলে লঙ্কা ক্রমশ বীরশূন্য হয়ে পড়ে । এই ভয়াবহ যুদ্ধে রাবণপুত্র বীরবাহু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন । এই অবস্থায় ধাত্রীমাতার কাছে খবর পেয়ে লঙ্কাপুরীতে রাবণপুত্র ইন্দ্রজিৎ উপস্থিত হলে তাঁকে দেখে রাক্ষসবীরগণ আনন্দে গর্জন করে । এই গর্জনের মধ্যে দিয়েই ইন্দ্রজিতের প্রতি তাদের আস্থা যেমন প্রকাশ পেয়েছে , তেমনি নিজেদের হতাশা কাটিয়ে ওঠার আনন্দও প্রকাশিত হয়েছে । 

 

বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর :

১. "হেন কালে তথা/দ্রুতগতি উতরিলা মেঘনাদ রথী।"—মেঘনাদ কখন, কোথায় উপস্থিত হলেন? সেখানে পিতার সঙ্গে তাঁর যে কথােপকথন হয় তা নিজের ভাষায় লেখাে। 

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ শীর্ষক কাব্যাংশে পুত্রশােকে কাতর লঙ্কেশ্বর যখন রণসজ্জা গ্রহণ করে চলেছেন । তখন মেঘনাদ এসে উপস্থিত হন।

স্বর্ণলঙ্কার রাজধানীতে যেখানে চলছিল লঙ্কেশ্বর রাবণের রণসজ্জা। প্রমােদ-উদ্যান থেকে যাত্রা করে মেঘনাদ সেখানে এসে উপস্থিত হন।

কথােপকথন : লঙ্কায় এসে ইন্দ্রজিৎ পিতা লঙ্কেশ্বরকে প্রণতি জানিয়ে বলেন যে, তিনি শুনেছেন, রঘুপতি রাঘব মরেও নাকি পুনরায় বেঁচে উঠেছেন। তিনি এ মায়া বুঝতে পারছেন না। পিতার অনুমতি চেয়ে পাপীকে সমূলে নাশ করার প্রতিশ্রুতি দেন ইন্দ্রজিৎ। বলেন ঘাের শরানলে ভস্ম করে বায়ু অস্ত্রে তাকে উড়িয়ে দেবেন। নতুবা বেঁধে এনে দেবেন রাজপদে। পুত্রের বীরত্বপূর্ণ উক্তিতে পিতা তাঁর শির চুম্বন করে বলেন যে, ইন্দ্রজিৎই লঙ্কার রাক্ষসকুলের ভরসা, তাই এই কালসমরে তাঁকে পাঠাতে চায় না তাঁর মন। ঈশ্বর তাঁর প্রতি বিরূপ, নতুবা শিলা কখনও জলে ভাসে না; লােক মরে গিয়ে পুনরায় বেঁচে ওঠে এ কথা কেউ কখনও শােনেনি।

উত্তরে ইন্দ্রজিৎ বীরদর্পে বলেন যে, তুচ্ছ রামচন্দ্রকে ভয় পাওয়ার কোনাে কারণ নেই। ইন্দ্রজিৎ থাকা সত্ত্বেও পিতা লঙ্কেশ্বর যদি যুদ্ধে যান তাহলে তাঁর নামে পৃথিবীতে কলঙ্ক রটে যাবে। ইন্দ্রজিৎ আরও বলেন যে, দু-বার তিনি যুদ্ধে রাঘবকে হারিয়েছেন, এবার তাঁকে কোনাে ওষুধে যেন বাঁচানাে না যায়, এমন আঘাতটাই করবেন। এই সময় ভ্রাতা কুম্ভকর্ণের মৃত্যুর জন্য দুঃখ প্রকাশ করে রাক্ষসপতি রাবণ ইন্দ্রজিৎকে নিকুম্ভিলা যজ্ঞ সাঙ্গ করে পরদিন প্রভাতে যুদ্ধে যাওয়ার অনুমতি দেন। তবে যদি একান্ত সমরে/ইচ্ছা তব, বৎস, আগে পূজইষ্টদেবে,—/নিকুম্ভিলা যজ্ঞ সাঙ্গ কর, বীরমণি!


২. প্রমীলা ও ইন্দ্রজিতের কথােপকথন বিবৃত করাে।

উত্তর : কবি-মাইকেল মধুসূদন দত্ত। কবিতা- ‘অভিষেক। মূল গ্রন্থ—মেঘনাদবধ কাব্য।

 ইন্দ্রজিৎ মায়াবী, মহাবীর, ধনুর্ধর, রাবণপুত্র। তাঁর পত্নী প্রমীলা সুন্দরী। কোমলস্বভাবা, বুদ্ধিমতী, বীরাঙ্গনাও। সেই প্রমীলা, শ্রীরামের সঙ্গে লঙ্কার যুদ্ধে যেতে উদ্যত স্বামী ইন্দ্রজিতের পথ রােধ করে দাঁড়িয়েছেন। কারণ এই যুদ্ধ কালযুদ্ধ। আর স্বামীর বিরহে তিনি কীভাবে কাল কাটাবেন? ছদ্মবেশিনী ধাত্রী-মার কাছ থেকে প্রিয় ভাই বীরবাহুর অসম্ভব মৃত্যুর কথা শুনে ক্রুদ্ধ মেঘনাদ কনক-বলয়াদি ছুড়ে ফেললেন। নিজেকে ধিক্কার দিলেন। তারপর বীর-আভরণে সেজে রথে চড়ে বীরদর্পে যুদ্ধে যেতে উদ্যত হলেন। ঠিক এই সময় প্রেমার্স প্রমীলা পথ ঘিরে দাঁড়ালেন। স্বামীর হাত দুটি ধরে কেঁদে উঠলেন— “কোথা প্রাণসখে,/ রাখি এ দাসীরে, কহ চলিলা আপনি? কী করে তার বিরহে প্রাণ ধরে থাকবেন অভাগিনী? গহন বনে লতা যদি দলপতি হাতির পা জড়িয়ে ধরে, যদি লতার সে রঙ্গরসে মন না দিয়ে যূথনাথ চলে যায়, তবুও তাকে তাে চরণাশ্রমে রাখে? “তবে কেন তুমি, গুণনিধি,/ত্যক্ত কিঙ্করীরে আজি?”

 যাওয়ার সময় ইন্দ্রজিৎ বললেন ,শীঘ্রই তিনি ফিরে আসবেন। তারই কল্যাণে রাঘব রামকে যুদ্ধে বিনাশ করবেন অবশ্যই। অতএব, “বিদায় এবে দেহ, বিধুমুখী।” প্রেমবিরহিণী প্রমীলার পথ রােধ যৌক্তিক এবং প্রেমমধুর আবেশে আদ্রর্তর। আবার প্রমীলার প্রতি বী ইন্দ্রজিতের সান্ত্বনা যেমন সম্ভাব্য শৌর্যসূচক, তেমনই গাঢ় প্রেমবিশ্বাসে কানায় কানায় ভরা ।

 

৩."কি হেতু মাতঃ গতি তব আজি/এ ভবনে’ ‘মাতঃ" বলে যাঁকে সম্বোধন করা হয়েছে তাঁর পরিচয় দাও। বক্তার সঙ্গে তাঁর যে কথােপকথন হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখাে। 

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ থেকে উদ্ধৃত এই অংশটির বকা হলেন বীর মেঘনাদ। তিনি মাতঃ বলে যাকে সম্বােধন করেছেন, তিনি হলেন ধাত্রী-মা প্রভাষার ছদ্মবেশে আসা লােকমাতা রমা। রমা বিশেষ উদ্দেশ্যে প্রভাষার ছদ্মবেশ ধারণ করেছেন এবং ইন্দ্রজিৎকে যুদ্ধে পাঠানাের উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রমােদ উদ্যানে ধাত্রী-মা প্রভাষার ছদ্মবেশে রমার আগমন ঘটলে ইন্দ্রজিৎ তাঁকে প্রণাম জানিয়ে তার আগমনের কারণ জানতে চান। জানতে চান লঙ্কা কুশলে আছে কিনা। ছদ্মবেশী রমা তাঁর শির চুম্বন করে জানান, স্বর্ণলঙ্কার দশা কহতব্য নয়। ঘােরতর রণে ভ্রাতা বীরবাহু নিহত হয়েছেন। শােকার্ত লঙ্কেশ্বর যুদ্ধে যাওয়ার জন্য সসৈন্যে সজ্জিত হচ্ছেন। প্রভাষা-রােহিণীকে ভগবতী সম্বােধন করে সবিস্ময়ে ইন্দ্রজিৎ জানতে চান, কে তাঁর প্রিয়ানুজকে বধ করেছে। নিশারণে তিনি রঘুবরকে সংহার করেছেন। শর বর্ষণ করে শত্রুদের খণ্ড খণ্ড করে কেটেছেন। এই অদ্ভুত সংবাদ জননী কোথায় পেলেন।‘এ বারতা, এ অদ্ভুত বারতা, জননী/কোথা পাইলে তুমি, শীঘ্ৰ কহ দাসে’। উত্তরে ছদ্মবেশী রমা ইন্দ্রজিৎকে পুত্র সম্বােধন করে বললেন, সীতাপতি মায়াবী মানব। তাঁর শরে মরে আবার বেঁচে উঠেছে। তিনি তাকে দ্রুত লঙ্কায় যাত্রা করার আদেশ দেন। এই কালসমরে রাক্ষসকুলের মান রক্ষা করতে বলেন।—“যাও তুমি ত্বরা করিঃ রক্ষ রক্ষকুল মান/এ কালসমরে, রক্ষঃ-চূড়ামণি !

 

৪.‘অভিষেক’ কবিতা অনুসারে মেঘনাদের চরিত্র বিশ্লেষণ করো। ৫

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ অনুসারে রাবণপুত্র ইন্দ্রজিতের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি হল এইরকম-

দেশপ্রেমিক- মেঘনাদ একজন যথার্থ দেশপ্রেমিক। ছদ্মবেশী লক্ষীদেবীকে দেখা মাত্রই সে জিজ্ঞাসা করেছিল- “কহ দাসে লঙ্কার কুশল”। তার অনুপস্থিতিতে শত্রুর দল স্বর্ণলঙ্কা ঘিরে ফেলেছে- এই খবর শোনা মাত্রই সে লঙ্কায় ফিরে যেতে চেয়েছিল। ব্যক্তিগত সুখের চেয়ে তার কাছে প্রিয় ছিল তার দেশ। তাই লঙ্কার বিপদের সময় সে ‘বামাদল মাঝে’ থাকার জন্য নিজেকে ধিক্কার জানিয়েছিল।

পিতৃভক্তি- লঙ্কায় ফিরে মেঘনাদ যখন দেখল যে তার পিতা অর্থাৎ রাক্ষসরাজ রাবণ যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন মেঘনাদ নিজেই রামের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রার অনুমতি চেয়েছিল। তাছাড়া, তার মতো একজন সক্ষম পুত্রের বর্তমানে যদি রাক্ষসরাজ রাবণ যুদ্ধক্ষেত্রে যান সেটা মেঘনাদের পক্ষে লজ্জাজনক। তার এইরকম মনোভাব থেকে তার আত্মসম্মান বোধেরও পরিচয় পাওয়া যায়।

সাহসী- রাম এবং তার বানরসেনা কুম্ভকর্ণ এবং বীরবাহুর মতো বীর যোদ্ধাদের নিধন করেছিল। তা সত্বেও মেঘনাদ স্বেচ্ছায় যুদ্ধ করতে যেতে চেয়েছিল। শুধু তাই নয়, সেই যুদ্ধে জয়লাভের ব্যাপারেও সে নিশ্চিত ছিল।

দায়িত্বশীল- প্রমীলার কাছে বিদায় নেওয়ার সময় সে তার লঙ্কাযাত্রার কারণ বলেছিল- “সমরে নাশি, তোমার কল্যাণে/ রাঘবে”। অর্থাৎ, তার স্ত্রীর (এবং সমস্ত রাক্ষসকূলের) মঙ্গলার্থে রামকে বধ করার জন্যই সে প্রমীলাকে রেখে লঙ্কায় যেতে উদ্যত হয়েছিল।

এছাড়াও মেঘনাদের চরিত্রের আরেকটি দিক হল গুরুজনদের প্রতি শ্রদ্ধা। ধাত্রী প্রভাষার ছদ্মবেশে লক্ষীদেবীকে যেমন সে প্রণাম করেছিল তেমনি লঙ্কায় ফিরেই পিতা রাক্ষসরাজ রাবণকে প্রণাম নিবেদন করেছিল।

 

৫.‘অভিষেক’ কবিতার স্বল্প পরিসরে রাক্ষসরাজ রাবণের চরিত্রের যে দিকগুলি উদ্ভাসিত হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখ । ৫

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশের প্রধান চরিত্র যদিও মেঘনাদ, তবে রাবণ চরিত্রটিও স্বমহিমায় উজ্জ্বল। আলোচ্য পাঠ্যাংশের ক্ষুদ্র পরিসরে রাক্ষসরাজ রাবণের চরিত্রের দিকগুলি ফুটে উঠেছে সেগুলি হল-

বীরত্ব লঙ্কাধিপতি রাবণ নিঃসন্দেহে একজন বীর যোদ্ধা ছিলেন। তার যোগ্যতম পুত্র মেঘনাদের অনুপুস্থিতিতে তিনি নিজেই যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। ইতিপূর্বে রামের সঙ্গে যুদ্ধ করে তার প্রিয় পুত্র বীরবাহু এবং প্রিয় ভাই মহাবলী কুম্ভকর্ণ প্রাণ হারিয়েছিল। আপনজনদের হারিয়ে রাবণ ভেঙে পড়েছিলেন ঠিকই কিন্তু শত্রুনিধনের উদ্দেশ্যে যথার্থ বীরের মতো রণসজ্জায় সজ্জিত হয়েছিলেন।

পুত্রস্নেহ: লঙ্কায় ফিরে আসার পর মেঘনাদ রামের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যেতে চেয়েছিল। মেঘনাদের বীরত্বের প্রতি রাবণের কোনো সন্দেহ ছিল না কিন্তু সেই ‘কাল সমরে’ বার বার নিজের প্রিয় পুত্রকে তার মন সায় দেয়নি।

সামরিক জ্ঞান: মেঘনাদ যখন একান্তই রামের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চেয়েছিল, রাবণ তাকে বলেছিলেন পরের দিন সকালে যেতে। কারণ, সেদিন সূর্য ছিল অস্তাচলগামী।

ঈশ্বরে ভক্তি: রাবণ মেঘনাদকে যুদ্ধযাত্রার আগে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে ইষ্টদেবের পূজা করতে বলেছিলেন। এর থেকে তার ঈশ্বরভক্তির পরিচয় পাওয়া যায়।

পরিশেষে বলা যায়, বাল্মীকি রামায়ণে রাক্ষসরাজ রাবণ একজন খলচরিত্র হলেও আলোচ্য কাব্যাংশে রাবণের মানবিক দিকটির পরিচয় পাওয়া যায়।

 

PDF will be available soon 

Join Our Telegram Channel for Notifications

 

pothon-pathon-online-telegram-channel

তোমাদের কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা তোমরা এই পোস্টের নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে জানাতে পারো ।

আমাদের লেটেস্ট পোস্টের আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করতে পারো । আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করার জন্য পাশের লিংকটিতে ক্লিক কর: Pothon Pathon Facebook Page

 

আমাদের Telegram Channel এ জয়েন হতে পাশের লিংক এ ক্লিক করন: Pothon Pathon Telegram

এছাড়া অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের মেল করতে পারো | আমাদের মেল আইডি হল: pothonpathononline@gmail.com

 

Tags: Madhyamik Bengali Notes, Madhyamik Bangla Notes PDF Download, WBBSE Class 10 Notes, WBBSE Class 10 Bengali Notes PDF, Sahitya Sanchayan Class 10 guide book PDF, Class 10 Bengali Abhishek Notes, abhishek question answers bengali class 10 pdf, অভিষেক কবিতার প্রশ্নোত্তর , অভিষেক কবিতার প্রশ্ন উত্তর 2023, দশম শ্রেণীর অভিষেক কবিতা, অভিষেক কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর,
 
 
 © Pothon Pathon Online

0/Post a Comment/Comments

Please put your valuable comments.

Previous Post Next Post