প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, পঠন পাঠন অনলাইন এর ওয়েবসাইটে তোমাদের স্বাগত জানাই | আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাংলার পূর্ণাঙ্গ সহায়ক গ্রন্থ : কোনি এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর নিয়ে ।
মাধ্যমিক লাস্ট মিনিট সাজেশনস 2022
বাংলা
পূর্ণাঙ্গ সহায়ক গ্রন্থ
১. বারুণী কি বার দিনে গঙ্গা ঘাটে যে দৃশ্যটি ফুটে উঠেছে তা লেখ ।
অথবা,
"আজ বারুণী । গঙ্গায় আজ কাঁচা আমের ছড়াছড়ি ।"– বারুণী কি? যেভাবে গঙ্গাতীরের বর্ণনা পাঠ্যাংশে দেওয়া হয়েছে, বুঝিয়ে লেখো ।
উত্তর : শতভিষা নক্ষত্রযুক্ত কৃষ্ণাচতুর্দশী তিথিতে পূর্ন্যস্নানাদি দ্বারা পালনীয় বিশেষ পর্ব হলো বারুণী । এই দিন মনের কামনা পুরনের ইচ্ছায় গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে কাঁচা ফল দান করা হয়।
বারুণী পর্ব কে কেন্দ্র করে গঙ্গার ঘাটে প্রচুর কাঁচা আম ভেসে যাচ্ছিল। মহা উৎসাহের সঙ্গে ছেলে-মেয়ের দল সেই আম কুড়োছিল। ভাটার জল কিছুটা সরে যাওয়ায় কাদামাখা পায়ে ফেরা লোকেদের মুখে ছিল বিরক্তির ছাপ । সাড়ে তিন মণ ওজনের বিষ্ঠুচরণ ধর একটা ছেঁড়া মাদুরে ওপর শুয়ে মালিশ করা ছিলেন এবং বিরক্তিসহ গঙ্গার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। সাদা লুঙ্গি গেরুয়া পাঞ্জাবি এবং চোখে মোটা লেন্সের চশমা পরিহিত পঞ্চাশ পঞ্চান্ন বছরের ক্ষিতিশ সিংহ বিষ্ঠুচরণ কে দেখে হাসছিলেন। তানপুরা, তবলা, সারেগামা ইত্যাদি বিচিত্র ভঙ্গিতে মালিশ করার নির্দেশ দিচ্ছিলেন বিষ্ঠুচরণ ধর। এই দৃশ্যে আনন্দিত হয়ে ক্ষিতিশ সিংহ বিষ্ঠুচরণ ধরের শরীর নিয়ে ব্যঙ্গ করে বলেন যে, তিনি নিয়মিত শরীরচর্চা করেন। নানান অঙ্গ ভঙ্গি করে যখন ক্ষিতিশ সিংহ মজা করতে শুরু করেন তখন বিষ্ঠুচরণ ধরের রাগের বদলে কৌতুহল হয়। ক্রমশ তাদের দুজনের মধ্যে আলাপ জমে ওঠে।
২. "ওর চোখে এখন রাগের বদলে কৌতুহল" কার কথা বলা হয়েছে? তার রাগ এবং কৌতূহলের কারণ লেখ। ১ + ৪
উত্তর : মতি নন্দীর কোনি উপন্যাসের প্রশ্ন উল্লেখিত অংশে বিষ্ঠুচরণ ধরের কথা বলা হয়েছে ।
গঙ্গাতীরে শরীর দলাই মলাই করতে গিয়ে বিষ্টু ধর অপরিচিত একটি লোকের দেখার বিষয় হয়ে ওঠেন এবং সাড়ে তিন মণ ওজনের বিষ্টু ধর এর মেসেজ প্রক্রিয়া দেখার পর সেই লোকটির তীব্র ব্যঙ্গের পাত্র হন বিষ্টু ধর। শুধু তাই নয় "আপনার হার্টটা বোধ হয় আর বেশি দিন এই গন্ধমাদন টানতে পারবে না"– একথা বলেই তিনি বিষ্টু ধরের মৃত্যু সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত করেন। তারপরে ব্যাঙ্গকে আরও তীক্ষ্ণ করে লোকটি বলেন যে "হাতি কিংবা হিপোর কখনো করোনারি অ্যাটাক হয়েছে বলে শুনিনি।" তাই তিনি ভুলও বলতে পারেন। এইসব কারণেই বিষ্ঠু ধর প্রচন্ড রেগে যান। কিন্তু তারপরেই লোকটির জগিং করা কিংবা লোকটির মুখে আইসোমেট্রিক, ক্যালিস্থেনিক, বারবেল ইত্যাদি নানা রকমের কথা শুনে বিষ্ঠু ধর লোকটির প্রতি আকৃষ্ট হন। যেভাবে লোকটি জগিং করতে করতে গঙ্গার ঘাটের সিঁড়ি দিয়ে শেষ ধাপ পর্যন্ত নামাওঠা করতে থাকেন তা দেখে বিষ্ঠু ধরের মনে লোকটির প্রতি রাগের বদলে কৌতুহল তৈরি হয়। মনে মনে তিনি ওই ছিপছিপে শরীরটার সঙ্গে নিজের মোটাসোটা শরীরকে বদলাবদলি করতে থাকেন ।
৩. "গলার স্বরে বোঝা গেল এর জন্য যে গর্বিত।"— কে কিসের জন্য গর্ব অনুভব করেছেন? তাঁর এই গর্বের বিষয়টি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : মতি নন্দীর লেখা কোনি উপন্যাসের প্রথম অধায়ে বিষ্ঠু ধর তাঁর ডায়েটিং বিষয়ে গর্ব প্রকাশ করেছেন ।
বিষ্ঠু ধর ডায়েটিং করতেন আর সেই কারণে তিনি যথেষ্ট গর্বিত ছিলেন। বিষ্ঠু ধর নিজের ডায়েটিং এর কথা বিস্তৃত ভাবে জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি আগে রোজ আধ কিলো ক্ষীর খেতেন। এখন সেটা তিনশো গ্রাম হয়েছে। আগে জলখাবারে কুড়িটা লুচি খেতেন যেটা এখন পনেরোটা হয়েছে। এখন নিয়ম করে মেপে তিনি আড়াইশো গ্রাম চালের ভাত খান। রাত্রে খান বারোটা রুটি। ঘি খাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন, শুধু গরম ভাতের সঙ্গে তিনি চার চামচ ঘি খান। বিকেলে তাঁর খাবার তালিকায় রয়েছে দু গ্লাস মিছরির সরবত আর চারটে কড়া পাকের সন্দেশ। প্রসঙ্গত বিষ্ঠু ধর জানিয়ে দেন যে, বাড়িতে রাধা গোবিন্দ এর মূর্তি থাকায় মাছ মাংস তিনি ছুঁয়েও দেখেন না। এই সঙ্গে তিনি গর্বিত ভাবে বলেন যে, সংযম ও শারীরিক কষ্ট স্বীকারে তিনি যথেষ্ট সক্ষম। তাঁদের বংশে কারোর হার্টের অসুখ হয়নি। যদিও সত্তরটি ফুলুরি খেয়ে তাঁর বাবা কলেরায় মারা গিয়েছেন, আর জ্যাঠার মৃত্যু ঘটেছে অম্বলে।
৪. "চার লক্ষ টাকা খরচ করেও আপনি নিজে শরীরটাকে চাকর বানাতে পারবেন না।"— কে, কাকে বলেছিলন? তিনি কেন এরূপ বলেছেন ? ১ + ৪
উত্তর : মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসের প্রথম পরিচ্ছেদে ক্ষিতীশ সিংহ বিষ্ঠুচরণ ধরকে উদ্দেশ্য করে আলোচ্য কথাটি বলেছিলেন ।
ধনী ব্যবসায়ী বিষ্ঠুচরণ ধর ছিলেন সাড়ে তিন মন ওজনের দেহের মালিক। তাঁর বিশালাকৃতি দেহটি বিচিত্র ভঙ্গিতে মালিশ করতে দেখে ক্ষিতীশ সিংহ তাঁকে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে হাতি বা হিপোর সাথে তুলনা করা ছাড়াও চাঁটি মেরে পালানোর কথা বলেন। "খাওয়ার আমার লোভ নেই" বলেও বিষ্ঠুচরণ তার ডায়েটিং করার যে ফর্দ বলেন, তা শুনে বিদ্রুপের সুরে ক্ষিতীশ সিংহ বলেন "এত কেচ্ছাসাধন করেন!" বিষ্ঠুচরণ ধরের এই ওজন যে তার হার্টের পক্ষে বিপজ্জনক মনে করিয়ে দিয়ে ক্ষিতীশ সিংহ শরীরটাকে চাকর বানানোর কথা বলেন। তিনি বিষ্ঠুচরণবাবুকে আরও জানান মন বা ইচ্ছাশক্তির দ্বারা শরীরটাকে পরিচালনা করা প্রয়োজন। সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে গেলে নিয়মিত শরীরচর্চা খাওয়া-দাওয়ার যথাযথ পরিমাণে ইত্যাদি বিষয়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন। ক্ষিতীশ সিংহ তার শরীর ও মনের শক্তি দিয়ে বিষ্ঠুচরণ ধরকে বুঝিয়ে দেন যে তিনি বিষ্ঠুচরণ ধরের তুলনায় বয়সে বড় হওয়া সত্বেও শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ।
৫. "হটাৎ তার চোখে ভেসে উঠল '৭০' সংখ্যাটা ।"— কোন ঘটনায় এমন হয়েছিল? কোনির কাছে এই সংখ্যাটার তাৎপর্য কি ছিল? ২ + ৩
উত্তর : কোনি একা চিপকের সুইমিং পুলে নিজের ইচ্ছেমতো অনুশীলন করে উঠে আসার সময় একটু মেয়ের মুখোমুখি হয়। পরিচয়ে জানতে পারে তার নাম রমা যোশি। সেই সময়েই কোনির চোখে '৭০' সংখ্যাটা ভেসে ওঠে।
কোনির চোখে '৭০' সংখ্যাটা এক গভীর তাৎপর্য নিয়ে ভেসে উঠেছিল। এই সংখ্যাটা হল '৭০' সেকেন্ড। মহারাষ্ট্রের সাঁতারু রমা যোশি ৭০ সেকেন্ডে সাঁতার শেষ করার রেকর্ড তৈরি করেছিল। এই রমা যোশিই ছিল কোনির প্রতিদ্বন্ধী। তাই ক্ষীতিশ সিংহ কোনির অনুশীলনের বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক, হিসেবি এবং কঠোর হয়ে ওঠেন। তিনি কোনির প্রতিদিনের অনুশীলনের পাশাপাশি তার খাওয়া , বিশ্রাম, রক্তে হিমোগ্লবিনের মাত্রা সব কিছুতে নজর রাখতে শুরু করেন। এই সময় তিনি লাল কালিতে বড়ো অক্ষরে '৭০' সংখ্যাটা লিখে ক্লাবের বারান্দার দেওয়ালে রেখে কোনিকে উৎসাহিত করতে চেয়েছিলেন। প্রতিদিন চোখের সামনে ওই সময়টি কোনিকে দেখিয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, " এক মিনিট ১০সেকেন্ডে কোনিকে এই বছরই সাঁতরাতে হবে ।" অসম্ভবকে সম্ভব করতে হবে। সময়ই যে কোনির একমাত্র শত্রু তা প্রতিমুহূর্তে ওই সংখ্যাটি সামনে রেখে তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন।
৬. "অভিনন্দন আর আদরে সে ডুবে যাচ্ছে।"— এখানে কার কথা বলা হয়েছে? অভিনন্দন আর আদরের কারণ বিশ্লেষণ করো। ১+৪
উত্তর : উধ্বৃত অংশটি মতি নন্দীর কো উপন্যাস থেকে গৃহীত। আলোচ্য অংশে কোনির কথাই বলা হয়েছে।
মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় কোনি বাংলা দলের হয়ে নামার সুযোগ পেয়েছিল। সেইমত বাংলার অন্য সাঁতারুদের সঙ্গে কোনিও যায় মাদ্রাজে। কিন্তু সেখানেও সে আগের মতই চক্রান্তের শিকার হয়। কোনো প্রতিযোগিতাতেই তাকে নামানো হয়না। শেষ পর্যন্ত প্রায় বাধ্য হয়েই তাকে ৪×১০০ মিটার রিলেতে নামানো হয়। এটাতে জিততে না পারলে বাংলা চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে না। আড়ষ্টতা নিয়েও কোনি শেষ পর্যন্ত এই শেষ প্রতিযোগিতায় নামে। তারপর শুরু হয় প্রবল উত্তেজনাপূর্ণ সাঁতার। শেষে সকলকে অবাক করে দিয়ে কোনি চ্যাম্পিয়ন হয়। সে হারিয়ে দেয় প্রখ্যাত রমা যোশি কে। কোনির এই সাফল্যে উত্তেজনায় ফেটে পড়ে দর্শকরা। সবাই এসে বাহবা দিতে থাকে কোনিকে। রমা যোশিও তার পিঠ চাপড়ে দিয়ে যায়। কোনিকে ঘিরে একটা ভিড়ের বৃত্ত রচিত হয়। বাংলার মেয়েরাও তাকে অভিনন্দন জানাতে আসে। জুপিটারের ধীরেন ঘোষ আবেগে কোনিকে জড়িয়ে ধরেন। এভাবেই অভিনন্দন আর আদরে কোনি ডুবে যেতে থাকে ।
তোমাদের কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা তোমরা এই পোস্টের নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে জানাতে পারো ।
আমাদের লেটেস্ট পোস্টের আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করতে পারো । আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করার জন্য পাশের লিংকটিতে ক্লিক কর: Pothon Pathon Facebook Page
আমাদের Telegram Channel এ জয়েন হতে পাশের লিংক এ ক্লিক করন: Pothon Pathon Telegram
Post a Comment
Please put your valuable comments.