মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নোত্তর | গল্প : পথের দাবী | WBBSE Madhyamik Bengali Notes | Class 10 Bengali Pather Dabi Question Answer

wbbse-madhyamik-bengali-notes-pather-dabi-story-question-answer-with-pdf-download

প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, পঠন পাঠন অনলাইন এর ওয়েবসাইটে তোমাদের স্বাগত জানাই | আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি মাধ্যমিক বাংলার পথের দাবী গল্পের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর নিয়ে । 

WBBSE Madhyamik Bengali Notes Pather Dabi Story Notes

মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নোত্তর

গল্প : পথের দাবী


বহুমুখী উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর (MCQ)

১. ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত শরৎচন্দ্রের উপন্যাস টি হল –

(ক) পথের দাবী

(খ) শেষ প্রশ্ন

(গ) গৃহদাহ

(ঘ) চরিত্রহীন

উত্তর : (ক) পথের দাবী


২. তেলের খনির কারখানার মিস্ত্রিরা চাকরির উদ্দেশ্যে গিয়েছিল –

(ক) রেঙ্গুন

(খ) কলকাতা

(গ) দিল্লি

(ঘ) কোনটাই নয়

উত্তর : (ক) রেঙ্গুন


৩.  নিজের নাম কি বলেছিলেন –

(ক) সব্যসাচী মল্লিক

(খ) সব্যসাচী চক্রবর্তী

(গ) নিমাইবাবু

(ঘ) অপূর্ব রায়

উত্তর : (ক) সব্যসাচী মল্লিক


৪. গিরীশ মহাপাত্রের মাথায় ছিল –

(ক) টিনের তোরঙ্গ

(খ) কম্বল জড়ানো বেডিং

(গ) বিছানার বান্ডিল

(ঘ) বড়ো সুটকেস

উত্তর : (ক) টিনের তরঙ্গ


৫. গিরীশ মহাপাত্রের বুকপকেটের রুমালে কোন প্রাণীর অবয়ব ছিল –

(ক) হরিণ

(খ) বাঘ

(গ) শেয়াল

(ঘ) হায়না

উত্তর : (খ) বাঘ


৬. রামদাস পেশায় ছিল –

(ক) করণিক

(খ) পেশকার

(গ) সাংবাদিক

(ঘ) অ্যাকাউন্ট্যান্ট

উত্তর : (ঘ) অ্যাকাউন্ট্যান্ট


৭. অপূর্বর জন্য মিষ্টি নিয়ে আসত –

(ক) রামদাস

(খ) রামদাস এর মা

(গ) অফিসের এক জন পেয়াদা

(ঘ) অপূর্বর সহকর্মী

উত্তর : (গ) অফিসের এক জন পেয়াদা


৮. অপূর্বর পিতার বন্ধু ছিলেন–

(ক)  গিরীশ মহাপাত্র

(খ) নিমাইবাবু

(গ) রামদাস

(ঘ) জগদীশবাবু

উত্তর : (খ) নিমাইবাবু


৯. কার ঘরে চুরি হয়েছিল?

(ক) সব্যসাচী

(খ) অপূর্ব

(গ) নিমাই

(ঘ) রামদাস

উত্তর : (গ) নিমাই


১০. তলওয়াকর হল–

(ক) রামদাস

(খ) রামদাস এর পিতা

(গ) অপূর্ব

(ঘ) অপূর্বর পিতা

উত্তর : (ক) রামদাস


১১. অপূর্বর মন টিকছিলো না —

(ক) বর্মায়

(খ) রেঙ্গুনে

(গ) কলকাতায়

(ঘ) দিল্লিতে

উত্তর : (খ) রেঙ্গুনে


১২. কোন সময় অপূর্ব ভামো নগরের উদ্দেশে যাত্রা করে —

(ক) গভীর রাতে

(খ) সকালবেলায়

(গ) দুপুরবেলায়

(ঘ) বিকেলবেলায়

উত্তর : (ঘ) বিকেলবেলায়


১৩. গিরীশ মহাপাত্রের সঙ্গে অপূর্বর পুনরায় কোথায় দেখা হয়েছিল —

(ক) পুলিশ স্টেশনে

(খ) জাহাজ ঘাটায়

(গ) রেল স্টেশনে

(ঘ) বিমান বন্দরে

উত্তর : (গ) রেল স্টেশনে


১৪. অপূর্বকে ট্রেনের কামরায় পুলিশের লোক ঘুম ভাঙিয়ে ছিল —

(ক) পাঁচবার

(খ) চারবার

(গ) তিনবার

(ঘ) দুবার

উত্তর : (ঘ) দুবার


১৫. অপূর্ব কোন শ্রেণীর যাত্রী ছিল —

(ক) তৃতীয় শ্রেণী

(খ) দ্বিতীয় শ্রেণী

(গ) প্রথম শ্রেণী

(ঘ) কোনটাই নয়

উত্তর : (গ) প্রথম শ্রেণী


১৬. "তোমার চিন্তা নেই ঠাকুর"— "ঠাকুর" বলা হয়েছে —

(ক) অপূর্বকে

(খ) ঈশ্বরকে

(গ) রামদাস কে

(ঘ) তেওয়ারিকে

উত্তর : (ঘ) তেওয়ারি কে


১৭. "বুনো হাঁস ধরাই এদের কাজ।"— "বুনো হাঁস বলা হয়েছে —

(ক) ভারতীয় দের

(খ) ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের

(গ) কালো মানুষদের

(ঘ) চোর- ডাকাতদের

উত্তর : (খ) ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের


১৮. "তেওয়ারি ঘরে ছিলনা।"— তেওয়ারি গিয়েছিল —

(ক) রেঙ্গুনে

(খ) দিল্লিতে

(গ) কাশ্মীরে

(ঘ) বর্মার

উত্তর : (ঘ) বর্মার


১৯. ফিরিঙ্গি ছোড়ারা লাথি মারে প্লাটফর্ম থেকে বার করে দিয়েছিল —

(ক) অপূর্ব কে

(খ) রামদাস কে

(গ) গিরীশ কে

(ঘ) কোনটাই নয়

উত্তর : (ক) অপূর্ব কে


২০. রামদাস এর স্ত্রী ও অপূর্বর সম্পর্ক ছিল —

(ক) মাসি বোনপো

(খ) কাকিমা ভাসুরপো

(গ) মামিমা ভাগ্নে

(ঘ) ভাই বোন

উত্তর : (ঘ) ভাই বোন


অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর :

১. অপূর্ব কোন সময় তার বাড়িতে হওয়া চুরির ঘটনা টা সবাই কে বললো?

উত্তর : অফিসের একজন  ব্রাহ্মন পেয়াদা অপূর্বর জন্য একটা নিস্তব্ধ করে খাবার জিনিস সাজিয়ে রাখলে খেতে বসে অপূর্ব তার বাড়িতে চুরির ঘটনাটি সবাইকে বলল ।


২. রামদাস অপূর্ব কেন একসাথে জলযোগ করত?

উত্তর : অপূর্বর সঙ্গে তার বা কোন আত্মীয় না থাকায় রামদাসের স্ত্রীর রথে অপূর্ব রামদাস এর সঙ্গে জলযোগ করত ।


৩. তলওয়ারকর অপূর্বকে কি জিজ্ঞাসা করেছিল?

উত্তর : অপূর্বকে বাড়ি ফিরে এসে অত্যন্ত অন্যমনস্ক দেখে জিজ্ঞাসা করেছিল সে তার বাড়ি থেকে কোনো চিঠি পেয়েছে কিনা এবং বাড়ির সবাই ভালো আছে কিনা।


৪. "অনুমান কতকটা তাই"— বক্তার কি অনুমান?

উত্তর : অপূর্ব সন্দেহ করেছিল তেওয়ারিই তার ঘরে চুরি করেছে। বক্তা রামদাসের অনুমানও তাই ছিল।


৫. নিমাইবাবু সঙ্গে অপূর্বর কি ধরনের সম্পর্ক ছিল?

উত্তর : নিমাইবাবু ছিলেন অপূর্বর বাবার বন্ধু এবং এই সূত্রে তিনি ছিলেন অপূর্বর আত্মীয়। অপূর্বর বাবাই তাকে এই চাকরিটা করে দিয়েছিলেন।


৬. অপূর্ব কোন ঘটনার প্রতিবাদ করেছিল?

উত্তর : কোনরকম দোষ না থাকা সত্ত্বেও কিছু ফিরিঙ্গি ছেলে অপূর্ব কে লাথি মেরে প্লাটফর্ম থেকে বার করে দিয়েছিল। সে এই অন্যায় ঘটনারই প্রতিবাদ করেছিল।


৭. তেওয়ারি কোথায় গিয়েছিল এবং সে সময় কি ঘটনা ঘটেছিল?

উত্তর : তেওয়ারি বর্মা নাচ দেখতে ফয়ারে গিয়েছিল এবং সেই সময় অপূর্বর ঘরে চুরি হয়েছিল।


৮. বড় সাহেব কি বলার জন্য টেলিগ্রাম নিয়ে অপূর্বর কাছে এসেছিল?

উত্তর : বড় সাহেব অপূর্ব কে বলেছিলেন ভামোর অফিসে বিশৃঙ্খল অবস্থা। ম্যানডালে, শোএবে, মিকথিলা এবং প্রোম সব অফিসেই গোলযোগ হচ্ছে। তাই অপূর্ব যেন সব অফিসগুলো একবার নিজে গিয়ে দেখে আসে। 


৯. ভামো নগরের উদ্দেশে যাত্রায় অপূর্বর সঙ্গে কে কে ছিল?

উত্তর : অপূর্ব ভামো নগরের উদ্দেশে আরদালি এবং অফিসের একজন হিন্দুস্তানি ব্রাহ্মন পেয়াদা ছিল।


১০. ট্রেনের মধ্যে কি কারনে অপূর্বর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে ছিল?

উত্তর : রাতে অপূর্ব শোয়ার পরে প্রায় বার তিনেক পুলিশের লোকরা তার নাম ঠিকানা লিখে নিয়ে যাবার জন্য তাকে জাগিয়ে বিরক্ত করায় অপূর্বর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটেছিল।


১১. গিরীশ মহাপাত্রের সঙ্গে অপূর্বর দ্বিতীয়বার কোথায় দেখা হয়েছিল?

উত্তর : গিরীশ মহাপাত্রের সঙ্গে অপূর্বর দ্বিতীয় বার দেখা হয়েছিল রেল স্টেশনে।


১২. কি ব্যাপারে অপূর্ব বিরক্ত হয়ে প্রতিবাদ করেছিল এবং তাকে কি বলা হয়েছিল?

উত্তর : ট্রেনে বারবার ঘুম ভাঙিয়ে নাম ঠিকানা জিজ্ঞাসা করায় অপূর্ব যখন বিরক্ত হয়ে প্রতিবাদ করেছিল তখন তাকে কটু কন্ঠে বলা হয়েছিল যে, যেহেতু সে ইউরোপিয়ান নয় তাই এগুলো তাকে সহ্য করতেই হবে।


১৩. "বড়বাবু হাসিতে লাগিলেন"— বড়বাবুর হাসার কারণ কি?

উত্তর : গিরীশ মহাপাত্রের অদ্ভুত পোশাক এবং আচরণ দেখে জগদীশবাবু তাকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে বড়বাবু হাসতে লাগলেন।


১৪. "তুমি গাঁজা খাও"— কে কাকে কেন এই প্রশ্ন করেছিলেন?

উত্তর : গিরীশ মহাপাত্রের পকেট থেকে একটি গাঁজার কলকে পাওয়া গিয়েছিল তাই নিমাইবাবু তাকে উক্ত প্রশ্নটিই জিজ্ঞাসা করেছিলেন।


১৫. "এই জানোয়ার টাকে ওয়াচ করার দরকার নেই, বড়বাবু।"— এমন উক্তির কারণ কি?

উত্তর : সব্যসাচী সন্দেহে অদ্ভুত পোশাক পরা গিরিশ মহাপাত্র কে থানায় আটকে রাখা হয়েছিল। তার চুলের লেবুর তেলের গন্ধে থানা শুধু লোকের মাথা ধরার উপক্রম হয়েছিল। এমন লোক যে সব্যসাচী হতে পারে না এ কথা ভেবেই তাকে জগদীশবাবু ছেড়ে দিতে বলেছিলেন ।

 

ব্যাখ্যা ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

১. পুলিশ স্টেশনে প্রবেশ করে অপূর্ব কি দেখলো?

উত্তর : পুলিশ স্টেশনে প্রবেশ করে অপূর্ব দেখল হল ঘরের মধ্যে জনা ছয়েক বাঙালি নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে বসে আছে। বর্মা অয়েল কোম্পানির তেলের খনির কারখানার কাজ করা যেসব মিস্ত্রিরা সেখানে জলহাওয়া সহ্য না হওয়ায় রেঙ্গুনে চলে এসেছিল তাদের সঙ্গে থাকা টিনের তরঙ্গ ও পুঁটুলি খুলে তদন্ত করা হচ্ছে। পলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে একজনকে আটকে রাখা হয়েছে। আর উপস্থিত যাত্রীদের নাম ঠিকানা ও তাদের বিবরণ নিয়ে রেখে দেওয়া হচ্ছে।


২. গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষা যে বর্ণনা পাই তা লেখ।

উত্তর : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় "পথের দাবী" রচনা অংশে গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষায় বর্ণনা পাই ত ছিল বেশ মজাদার। তার গায়ের ছিল জাপানি সিল্ক এর রামধনুর রং এর চুড়িদার  পাঞ্জাবি যার বুক পকেট থেকে বাঘ আঁকা একটা রুমাল এর কিছু অংশ দেখা যাচ্ছিল। গায়ে কোন উত্তরীয় ছিলনা। পরনে ছিল বিলাতি মিলের কালো মখমল পাড়ের সূক্ষ্ম শাড়ি, পায়ে সবুজ রঙের ফুল মোজা— হাঁটুর ওপরে লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা। আর বার্নিশ করা পাম্প সু এর তোলা টা আগাগোড়া লোহার নাল বাধানো ছিল আর হাতে ছিল হরিণের শিং এর হাতল দেওয়া একগাছি বেতের ছড়ি; কয়েকদিনের জাহাজের ধকলে যেগুলি সব নোংরা হয়ে উঠেছিল।


৩. "তুমি এখন যেতে পারো মহাপাত্র"— বক্তা কে? মহাপাত্র কে যেতে বলা হয়েছে কেন?

উত্তর : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত "পথের দাবী" রচনা অংশে বাঙালি পুলিশ অফিসার নিমাইবাবু হলেন আলোচ্য উক্তিটির বক্তা ।

রাজবিদ্রোহী সব্যসাচী সন্দেহে গিরিশ মহাপাত্র কে থানায় আটক করা হয়েছিল। তার কাছে থাকা বাক্স তোরঙ্গ এবং অন্যান্য জিনিসপত্র পরীক্ষা করে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। তাছাড়া স্বাধীনতা সংগ্রামী সব্যসাচী কালচারের সঙ্গে গিরীশ মহাপাত্রের চেহারা ও বেশভূষার কোন মিল ছিল না। সেই কারণে নিমাইবাবু তাকে চলে যেতে বলেছিলেন।


৪. "কিরূপ সদাশয় ব্যক্তি ইনি"— কি কারনে নিমাইবাবু গিরিশ মহাপাত্র কে সদাশয় ব্যক্তি বলেছিলেন?

উত্তর : গিরীশ মহাপাত্রের জিনিসপত্র যখন তদন্ত হচ্ছিল তখন তার কাছে গাঁজার কলকেও ছিল কিন্তু যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে কলকেটি তার কিনা, তার উত্তরে বলেছিল সে নিজে খায় না। গাঁজার কলকেটিকে সে পথে কুড়িয়ে পেয়েছে এবং তারপর থেকে সেটিকে সে নিজের কাছেই রেখে দিয়েছে। যদি কখনো কারোর কাজে লাগে তাহলে সে তাকে সেটা দিয়ে দেবে। তার এই অদ্ভুত পরোপকারের ইচ্ছের জন্য নিমাইবাবু তাকে সদাশয় ব্যক্তি  বলেছিলেন।


৫. "আমি ভীরু কিন্তু তাই বলে অবিচারে দন্ড ভোগ করার অপমান আমাকে কম বাজে না"— বক্তা কাকে একথা বলেছিলেন? কোন অবিচারের দন্ডভোগ তাকে ব্যাথিত করেছিল?  {১+২}

উত্তর : বক্তা অপূর্ব উদ্ধৃত কথাটি রামদাসকে বলেছিলেন ।

❑❑ বিনা অপরাধে অপূর্বকে কতগুলো ফিরিঙ্গি ছেলে লাথি মেরে রেলওয় প্লাটফর্ম থেকে বার করে দিয়েছিল। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলেও কোনো ফল হয়নি। দেশি লোক না হওয়ায় সাহেব স্টেশন মাস্টার তার কথা না শুনে তাকে তাড়িয়ে দেয়। সেখানে উপস্থিত ভারতীয় কোনো প্রতিবাদ করেনি। এই অবিচারে দণ্ডভোগ অপূর্বকে কষ্ট দিয়েছিল।


৬. "তার লাঞ্ছনা এই কালো চামড়ার নিচে কম জ্বলে না, তলওয়ারকর।"— কোন লাঞ্ছনার কথা এখানে বলা হয়েছে?

উত্তর : আমাদের পাঠ্যাংশ "পথের দাবী" থেকে গৃহীত উদ্ধৃত লাঞ্ছনার ঘটনাটি অপূর্ব কে বলেছিল। শুধু দেশী লোক বলে অপূর্বকে বিনা দোষে প্ল্যটফর্ম থেকে বার করে দিয়েছিল কিছু ফিরিঙ্গি ছেলে। তার নিজের দেশের স্টেশন থেকেই তাকে অপমান করে কুকুরের মত তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ইংরেজদের কাছে নিজের দেশে এভাবেই লাঞ্চিত হতে হয়েছিল অপূর্ব কে।


৭. "নানাকারণে রেঙ্গুনে তাহার আর একমুহূর্ত মন টিকিতেছিল না।"— এখানে কার কথা বলা হয়েছে? তার মন না টেকার কারণ কি?

উত্তর : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবী রচনা অংশে থেকে নেওয়া উচিত অংশে অপূর্বর কথাই বলা হয়েছে ।

❑❑ অপূর্ব বোথা কোম্পানির চাকরি নিয়ে রেঙ্গুনে এসেছিল। সেখানে নানা নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছিল। এক স্টেশনে বিনা দোষে ফিরিঙ্গি ছেলেরা তাকে লাথি মেরে প্লাটফর্ম থেকে বের করে দিয়েছিল। প্রতিবাদ জানাতে গেলে সাহেব স্টেশন মাস্টার তাকে কুকুরের মত স্টেশন থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। এইসব ঘটনার জন্যই রেঙ্গুনে তার মন টিকছিল না।


৮. "অপূর্ব হঠাৎ চকিত হইয়া বলিয়া উঠিল"— স্টেশনে কি দেখে অপূর্ব চমকে উঠেছিল?

উত্তর : অপূর্ব তার অফিসের বড়োসাহেবের নির্দেশে রেঙ্গুন থেকে ভামোর উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। স্টেশনে যখন ট্রেন ছাড়তে কিছুক্ষন দেরি ছিল সেই সময় সে পুলিশ স্টেশনে পরিচয় হওয়া গিরীশ মহাপাত্র কে দেখে চমকে উঠেছিল। যেভাবে পুলিশ স্টেশনে গিরীশ মহাপাত্র কে দেখেছিল তার সেই একইরকম সাজপোশাক ছিল। সেই সঙ্গে একই বাহারি জামা, সবুজ মোজা, পাম্প সু আর ছড়ি। একটা রুমাল বুকপকেটে ছড়িয়ে গলায় জড়ানো— এটাই ছিল পার্থক্য । 

 

৯. “কিন্তু বুনো হাঁস ধরাই যে এদের কাজ”–বক্তা কে? এদের কাজ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে এবং কেন?

উত্তর : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের "পথের দাবী" রচনায় বুনাে হাঁসের কথা বলেছিলেন রামদাস।

❑❑ প্রসঙ্গত উল্লেখিত  অপূর্ব জানিয়েছিল গিরীশ মহাপাত্রকে হাতে পেয়েও সামান্যতম বুদ্ধিমত্তার পরিচয় না দিতে পারায়, তাকে ছেড়ে দিতে হয়। এই পুলিশ তার কাজকর্ম সম্পর্কে এতটাই অমনােযােগী যে অপূর্বর চুরি হওয়া কোনাে জিনিসের কুল কিনারা করতে পারেনি। সেই কথা শুনে রামদাস রীতিমতাে কৌতুকের সাথে আলােচ্য এই উক্তি করেছিল।

 

বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর :

১. "পথের দাবী" রচনাংশে অপূর্বর স্বদেশ প্রেমের যে পরিচয় লিপিবদ্ধ হয়েছে, তা নিজের ভাষায় লেখ।

উত্তর : শরৎচন্দ্র চট্টোপধ্যায়ের "পথের দাবী" রচনাংশে অপূর্ব চরিত্রটির হৃদয়ে স্বদেশ ও স্বজনের প্রতি অনুরাগ থেকেই বোঝা যায় তার দেশপ্রেম কতখানি অকৃত্রিম ।

❑❑ নিজের বাড়িতে চুরির সংবাদ জানতে থানায় এসে অপূর্ব দেখেছিল সব্যসাচী সন্দেহে ধৃত গিরীশ মহাপাত্রের খানাতল্লাশির ঘটনা। "সব্যসাচী" নামটি শুনেই অপূর্বর সংবেদ বিচলিত হয়েছিল। গিরীশ মহাপাত্র কে সব্যসাচী ভেবেই সে মনে মনে প্রার্থনা করেছে পুলিশ যেনো ওই ব্যাক্তি কে গ্রেফতার না করে। তাই তাকে বলে শুনি– "কাকাবাবু, এ লোকটিকে আপনি কোনো কথা জিজ্ঞেস না করেই ছেড়ে দিন, যাকে খুঁজছেন সে যে এ নয়, তার আমি জামিন হতে পারি।" আবার নিমাইবাবুর কার্যকলাপকে সে সমর্থন করেনি। অপূর্বর অন্তরের লুকোনো স্বদেশপ্রেম ক্ষোভের মধ্য দিয়ে এইভাবে প্রকাশ পেয়েছে— "তাছাড়া আমার বড়ো লজ্জা এই যে, এদের যিনি কর্তা তিনি আমার আত্মীয়, আমার পিতার বন্ধু।" অপূর্বর দেশপ্রেমের যথার্থ পরিচয় পাওয়া যায় রামদাস এর সঙ্গে কথোকথনের মধ্যে। সব্যসাচী সম্পর্কে তার শ্রদ্ধা ভক্তি চেপে রাখতে না পেরে সে বলেছে— "যাকে তিনি দেশের টাকায়, দেশের লোক দিয়ে শিকারের মতো তাড়া করে বেড়াচ্ছেন তিনি ঢের বেশি আমার আপনার।" কোনো কোনো সময় অপূর্ব খুব আবেগময় হয়ে পড়েছে। রাজরোষে পড়তে হবে জেনেও সে মনের ক্ষোভ ও বেদনাকে চেপে রাখতে পারেনি। রচনাংশটির নাম "পথের দাবী" হলেও আসলে কাহিনীটি অপূর্বর অকৃত্রিম দেশপ্রেমেরই প্রকাশ। 


২. ভামো নগরেরনগরের উদ্দেশে যাত্রাকালে অপূর্বর কি অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বর্ণনা করো 

উত্তর : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় পথের দাবী গল্পে অপূর্ব রেঙ্গুন থেকে ভামো নগরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। অপূর্ব প্রথম শ্রেণীর যাত্রী ছিল। সন্ধ্যা হলে সে প্রতিদিন নিয়ম করে সেই সবই করছিল। রাতের খাবারের পর অপূর্ব যখন শুতে যায় তখন সে ভেবেছিল প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী হওয়ার নিশ্চিন্ত মনে বাকি রাস্তাটা যেতে পারবে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই বুঝতে পারে এই ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। সেই রাতে পুলিশের লোক এসে বার তিনেক তার ঘুম ভাঙিয়ে নাম-ঠিকানা লিখে নিয়ে যায়। অবশেষে বিরক্ত হয়ে অপূর্ব এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে বর্মা সাব-ইন্সপেক্টর কটুকন্ঠে তাকে বলে যে সে ইউরোপিয়ান নয় তাই এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। এই কথা শুনে অপূর্ব তাকে বলে যে সে প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী তাই কেউ তার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে না। তার কথায় পুলিশ হাসতে হাসতে জবাব দিয়েছিল এই সব নিয়ম শুধু রেলওয়ে কর্মচারীদের জন্য। তাই পুলিশ যদি ইচ্ছে করে তাহলে তাকে ট্রেন থেকে নামিয়ে দিতেও পারে। তার প্রতিবাদ করার কোন অধিকার নেই। পরাধীন ভারতবর্ষে ইংরেজদের হাতে অপমান লাঞ্ছনা আরো একটি ঘটনা এইভাবে সংযোজিত হয় অপুর্বর অভিজ্ঞতায়।


৩. "পথের দাবী" রচনা অংশে অবলম্বনে অপূর্বর চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো।

উত্তর : প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় "পথের দাবী" রচনাংশে অপূর্ব অনুভূতি হয়ে উঠেছে কাহিনীর মূল বিষয়বস্তু ।

প্রাথমিক পরিচয় : অপূর্ব বাংলাদেশের ছেলে একসময় সে ও স্বদেশী আন্দোলন করতো এখন চাকরির জন্য দেশ ছেড়ে রেঙ্গনি এসেছে এখানে তার সঙ্গে দেখা হয়ে যায় তার বাবার বন্ধু পুলিশকর্তা নিমাইবাবুর ।


দেশপ্রেম : নিমাইবাবু মুখে সব্যসাচীর বর্ণনা শুনে অপূর্বর মনের এই মহান দেশ প্রেমিক সম্পর্কে শ্রদ্ধা ও ভক্তি জেগে ওঠে। তবে রাগ হয় নিমাইবাবুর ওপর, কারণ বাঙালি হয়েও তিনি নিজের দেশের এত বড় একজন মুক্তিযোদ্ধাকে গ্রেফতার করতে তৎপর। সব্যসাচী সন্দেহে আটক গিরিশ মহাপাত্রই আসলে সব্যসাচী, তা অনুমান করতে অপূর্ব দেরি হয়নি। তাই সে নিমাইবাবু কে বলেছে এই লোকটিকে কোন কথা জিজ্ঞেস না করেই ছেড়ে দিন। যাকে খুঁজছেন সে এ নয়। আমি তার জামিন হতে পারি।  পুলিশের কাছে এরকম উক্তি অপূর্বর চরিত্রের দৃঢ়তা ও দেশপ্রেমকেই তুলে ধরে।


সাহস ও প্রতিবাদী স্বভাব : সে রামদাস এর কাছে পুলিশের সমালোচনা করেছে এতে অপূর্ব রাজদ্রোহী তার অপরাধের শাস্তি পেতে পারে। কিন্তু মনে রাগ সে চেপে রাখতে পারেনি। শান্তশিষ্ট হলেও অপূর্ব প্রতিবাদী সাব-ইন্সপেক্টর আচরণের প্রতিবাদ করার ক্ষেত্রে তাই সে এতটুকু দ্বিধা করেনি ।

সবদিক দিয়ে বিচার করলে বলা যায় doing and suffering এর ভিত্তিতে অপূর্ব আলোচ্য কাহিনীর অংশের মুখ্য চরিত্র।


৪. পথের দাবী রচনা অবলম্বনে নিমাইবাবুর চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো। 

উত্তর : প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় "পথের দাবী" শীর্ষক স্বদেশমূলক উপন্যাসে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি লেখকের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশিত হয়েছে। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র সব্যসাচী হলেও কিছু অপ্রধান চরিত্র কাহিনীর গতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছে। এই ধরনের চরিত্রগুলির মধ্যে গল্পে নিমাইবাবুর চরিত্র টি খুব গুরুত্বপূর্ণ।

মানবিক দিক : পুলিশের বড়ো কর্তা হলেও নিষ্ঠুর নন নিমাইবাবু। গিরীশ মহাপাত্রকে সব্যসাচী সন্দেহ করলেও তার সঙ্গে যে রঙ্গ তামাশা করেন তা নিছক রসিকতা নয়, তার মানবিক দিকই বটে। তার শরীরের কথা চিন্তা করে তাকে বলেন - "কিন্তু ক'দিনই বা বাঁচবে,– এই তো তোমার দেহ, আর খেয়ো না। বুড়োমানুষটার কথা শোনো"। অন্যদিকে নিমাইবাবুর শান্ত, ভদ্র, স্বল্পভাষী স্বভাব তাকে শ্রদ্ধার আসনে বসিয়েছেন। 

পেশাগত দায়িত্ব : নিমাইবাবু পেশায় পুলিশ অফিসার। তিনি নিজে বাঙালি এবং ভারতীয় হয়েও কর্তব্যের খাতিরে ভারতের মুক্তিসংগ্রামের অগ্রদূত সব্যসাচী মল্লিক কে আটক করতে সুদূর রেঙ্গুনে যান। নিজের ধর্ম,জাতি, মোহ কোনোকিছুর এর পেশাগত দায়িত্ব কর্তব্য পালনে বাধা দিতে পারেনি। 

এই সমস্ত বিশেষত্ব গুলিই কাহিনীতে নিমাইবাবু চরিত্রটিকে স্বতন্ত্র মর্যাদা, সম্মান দান করেছে । 

 

৫. তোমাদের পাঠ্য পথের দাবীতে গিরিশ মহাপাত্র যদি সত্যি সত্যি হয় তবে তার সম্পর্কে তোমার মনোভাব ব্যক্ত করো।

উত্তর : পথের দাবী রচনা অংশে উল্লেখিত গিরিশ মহাপাত্র কিনা তার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না উপন্যাসের কাহিনী অনুসারে গিরীশ মহাপাত্রেই সব্যসাচী। কিন্তু আলোচ্য আংশিক কাহিনীতে বোঝার কোন উপায় নেই যে উদ্দিষ্ট ব্যক্তিই সব্যসাচী। এমনকি অভিজ্ঞ পুলিশ অফিসার নিমাইবাবু বা জগদীশবাবু তা বুঝতে পারেনি গিরিশ মহাপাত্র সব্যসাচী তাহলে প্রথমেই লক্ষ্য কোটি প্রণাম। শুধু আমি কেন যে কোন ভারতীয় নতজানু হয়ে থাকে শ্রদ্ধা জানাবে। গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষা শুধুই নিমাইবাবু পিস্তল কেনা বিখ্যাত গোয়েন্দা হার মানিয়ে দেবে। সদা সতর্ক ইংলিশ পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়া এমন কৌশল আর কি হতে পারে।  সব্যসাচী জানেন ছদ্মবেশ যেনো  কখনোই নিছক "ছদ্ম" না হয়। সে কারণে তিনি তার মাথার চুল ছেঁটে চেন অদ্ভুতভাবে। কালচার পাল্টাতে পারলে পুলিশ তাকে চিনতে পারবে না। এই ভেবে সব্যসাচী তার সমগ্র কালচারটাই পাল্টে ফেলেছিলেন। তার রোগা জীর্ণ শরীর তো ছদ্মবেশ নয়। স্বদেশের মুক্তির জন্য দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে শরীরের দিকে নজর দেওয়ার কোনো অবকাশ তাঁর ছিল না। তবে অমর প্রাণশক্তিটুকুই জন্যই সব্যসাচী কে মৃত্যু স্পর্শ করতে পারে না। তাই বলা যায়, এমন নিবেদিত প্রাণ দেশপ্রেমিক কে হাজারও কুর্নিশ জানালেও আবেগের যথার্থ প্রকাশ হয় না ।

 

PDF will be available soon 

Join Our Telegram Channel for Notifications

 

pothon-pathon-online-telegram-channel

তোমাদের কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা তোমরা এই পোস্টের নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে জানাতে পারো ।

আমাদের লেটেস্ট পোস্টের আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করতে পারো । আমাদের ফেসবুক পেজ জয়েন করার জন্য পাশের লিংকটিতে ক্লিক কর: Pothon Pathon Facebook Page

 

আমাদের Telegram Channel এ জয়েন হতে পাশের লিংক এ ক্লিক করন: Pothon Pathon Telegram

এছাড়া অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের মেল করতে পারো | আমাদের মেল আইডি হল: pothonpathononline@gmail.com

 

Tags: Madhyamik Bengali Notes, Madhyamik Bangla Notes PDF Download, WBBSE Class 10 Notes, WBBSE Class 10 Bengali Notes PDF, Sahitya Sanchayan Class 10 guide book PDF, Class 10 Bengali Pather Dabi Notes, Class 10 Bengali Pather Dabi Question Answer, পথের দাবী গল্পের  প্রশ্নোত্তর ,মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন গল্প : পথের দাবী
 
 
 © Pothon Pathon Online

0/Post a Comment/Comments

Please put your valuable comments.

Previous Post Next Post